রাজশাহী বিভাগে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবী মামলা দেওয়া হচ্ছে সংবাদ সম্মেলনে মিনু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু অভিযোগ করে বলেছেন, রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে প্রতিটি থানার পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করছে। গায়েবী মামলা রুজু করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লোকজন কোথাও অকারণে বোমা ফাটাচ্ছে, বোমা রেখে দিচ্ছে। অতঃপর বিএনপির নামে সাজানো মামলা দেওয়া হচ্ছে। লোকজন জানতেও পারছে না, কী কারণে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় রাজশাহী নগরীর একটি রেস্টুরেণ্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে অনুষ্ঠিতব্য গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিভাগে দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা, পুলিশি হয়রানি, হামলা ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এতে অন্যদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি শাহজাহান মিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ এমপি, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল,
রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ এমপি বলেন, পুলিশ যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যাচ্ছে সেখানে পুলিশ সাক্ষী পুলিশই বাদী। এ অবস্থায় পুলিশের বর্তমান কর্মকা- মানবাধিকার লংঘনের শামিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের আইন সবার জন্য সমান। এর জন্য পুলিশকে
আইনের আওতায় আসতে হবে। আগামী ৩ ডিসেম্বর জনগণ কোনো বাধাই মানবে না। সব বাধা উপেক্ষা করে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠ জনতার জোয়ারে পরিণত হবে।
লিখিত বক্তব্যে রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ সমন্বয় কমিটির দলনেতা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান বলেন, দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে এরইমধ্যে গণমসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেসব সমাবেশে সরকারের পক্ষ থেকে নজিরবিহীন বাধা এবং সব ধরণের যানবাহন বন্ধ করে দেওয়ার পরও বিএনপি নেতা কর্মীদের রুখতে পারেনি।
রাজশাহীর গণসমাবেশ বানচাল করতেও গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান মিনু বলেন, অন্য বিভাগীয় শহরে কোনো প্রকার মামলা হয়নি। সেখানে ব্যাপক পরিমাণে জনসমাগম হয়েছিল। তবে সব বিভাগীয় শহরকে ছাড়িয়ে রাজশাহীর গণসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। এ জন্য যদি বুক থেকে তাজা রক্ত পিচঢালা পথে ঢেলে দিতে হয়, তাতেও নেতাকর্মীরা রাজি আছেন। সব ষড়যন্ত্র ও বাধা উপেক্ষা করে পুরো নগরী ব্যাপক জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহী বিভাগে এরইমধ্যে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজশাহীর গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য যখন তারা বিভাগের আট জেলা, এক মহানগরী, ৬৭টি উপজেলা ও থানায় প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন, তখনই সরকার নতুন মাত্রার অত্যাচার ও নির্যাতনের ফর্মুলা নিয়ে হাজির হয়েছে।
বিএনপি নেতা মিনু বলেন, বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় বিভাগীয় সমবেশের প্রস্তুতিমূলক সমন্বয় সভায় পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। পরে সেখান থেকে বিনা কারণে ১৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি আরো বলেন, বিএনপি কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয় যে গোপন বৈঠক করবে তারা।
বিএনপি নেতা মিনু বলেন, সরকারের বেআইনি আদেশ পালনে প্রশাসন ও পুলিশ বাধ্য নয়। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অতি উৎসাহী ভূমিকার কারণে জনগণের কাছে গণদুশমনে পরিণত হবেন না। দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রসংগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কতিপয় অতিউৎসাহী পুলিশ বেআইনি নির্দেশনা দিচ্ছেন। দেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সংবিধানসম্মতভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে প্রশাসন ও পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতন, ত্রাস এমন এক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, উপজেলা পর্যায়ে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এলাকায় থাকতে পারছেন না। মানুষের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ পর্যন্ত করতে পারছেন না তারা।
তিনি বলেন, রাজশাহী বিভাগের থানাগুলোর মধ্যে এ পর্যন্ত ৪৪টি থানায় নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোতে হয়তো আগামী দু’একদিনের মধ্যে দেবে। তিনি হুসিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যত যড়যন্ত্রই করুক না কেন রাজশাহীর গণসমাবেশ হবে সেরা সমাবেশ ব্যাপক জনসমুদ্র।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.