রাজশাহীর তানোর উপজেলার আধুনিক পাঠদানের জন্য প্রজেক্টর আছে ব্যবহার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন বছর এলেই নতুন ইমেজে নতুন বই হাতে ছোট ক্লাস থেকে বড় ক্লাসে পদার্পনের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়। সেই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রজেক্টর থাকলেও হচ্ছে না মাল্টি মিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাসে পাঠদান। প্রজেক্টর ব্যবহার না করে আগের নিয়মেই চলছে পাঠদান।

ফলে আধুনিক ও উন্নত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি প্রজেক্টরগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তানোর উপজেলা মাধ্যমিক অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৩০ মে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস নেয়া শুরু হয়।

ক্রমন্বয়ে উপজেলার মাধ্যমিক, দাখিল ও কলেজসহ ১ শ ১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি করে ল্যাপটপ, একটি প্রজেক্টর ও স্ক্রিন সরবরাহ করা হয়। এসব যন্ত্র ব্যবহার উপযোগী করতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একজন করে শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

শুরুতে কিছুদিন ভালোভাবে ক্লাস হলেও এর কিছুদিন যেতে না যেতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস নেয়া পদ্ধতি। এ পর্যন্ত উপজেলার ২ শ ৫ জন শিক্ষককে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ নেয়া শিক্ষকের মাধ্যমে ইন হাউস প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গত বছরের শুরুতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাসে মনোযোগী ও আকর্ষণ জোগাতে ২/১ দিন ক্লাস নেন মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে। পরে প্রতি মাসের শেষে প্রত্যেক ক্লাসে একদিন শুধু ফটোসেশন হয়। এবছর এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি মাল্টিিিমডিয়ার মাধ্যমে প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস। উপজেলার প্রায় শিক্ষা মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের থাকলেও ব্যবহার নেই। এ অবস্থা চলছে উপজেলার স্কুল ও কলেজ গুলোতে। মাদ্রাসাগুলো চলছে আগের নিয়মেই। এজন্য উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার ১৪টি কলেজ, ৫৯টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ২৮টি মাদ্রাসার মধ্যে ৭৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর রয়েছে। কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে ক্লাস চলছে, তবে পুরনো আদলে। এমনকি কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বলতেই পারে না যে ওই বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ক্লাস নেয়ার উপকরণ রয়েছে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুধু লোক দেখানোর জন্য প্রজেক্টরের ব্যবহার করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের গাফলতি ও প্রশাসনের তদারকির অভাব এবং আইটিসি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া শিক্ষকদের অনীহার কারণে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস নেয়া হয়না, ফলে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, একজন শিক্ষককে আইসিটি (তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি) প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, ওই শিক্ষক নিয়মিত প্রজেক্টর ক্লাস নেন কি না, খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।

তিনি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস নিতে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সব উপকরণ থাকা সত্তে¡ও যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের ক্লাস নিচ্ছে না তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.