রাজশাহীর তানোরে বিরোধের জেরে দুই সন্তানের জননীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা  থানায় মামলা আটক ২

বিশেষ প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে  সুমিত্রা (৩৩) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার ১৬ই নভেম্বর ২০১৯ইং বেলা ১১টার দিকে তানোর পৌরসভার তালন্দ গ্রামে এই আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে। নিহত সুমিত্রা ওই গ্রামের মৃত: ভোলানাথ দাসের ছেলে শ্রী অখিল চন্দ্র দাসের স্ত্রী এবং রাজশাহী জেলার এয়ারপোর্ট থানার তকিপুর গ্রামের  শ্রী গোবিন্দ্র চন্দ্র মন্ডলের মেয়ে বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়।

নিহতের স্বামীর অভিযোগ, আমার দুই ভাই শ্রী মনিল চন্দ্র দাস (৪৫), শ্রী নিখিল চন্দ্র দাস (৩৮), তাদের উভয়ের স্ত্রী শ্রীমতি আরতী (৩২), ও শ্রীমতি মিনতী রানী (৩১), আমার স্ত্রী সুমিত্রাকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে জ্বালা যন্ত্রানা, মারপিট সহ মানষিক নির্যাতন করত। এতে করে আমার স্ত্রী মানষিক নির্যাতনের কারনে  সবসময় অস্তিরতাবোধ করত।

ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে সুমিত্রাকে চরিত্রহীন ও পরকিয়ার কথা বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গালিগালাজ করে এবং বলে যে, তুই গলায় ফাঁসি দিয়া মরতে পারিস না। তুই মরলে আমরা তোর স্বামীকে আবার নতুন করে বিয়ে করাবো, এসব কথার কারনে এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে রাগ করে আমার স্ত্রী সুমিত্রা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

নিহতের ভাই শ্রী নয়ন কুমার মন্ডল বিটিসি নিউজকে বলেন, আমার বোনের বিয়ে দিয়েছি প্রায় ১৮ বছর আগে, আমার বোনের সংসারে স্বামী ও দুই মেয়ে রিয়া রাণী দাস (১২) বছর সে ৫ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে অপরজন অংকিতা রাণী দাস যার বয়স  ১বছর, তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। কিন্তু আমার বোন জামাইয়ের দুই ভাই ও তাদের স্ত্রীরা বিয়ের শুরু থেকেই  সাংসারিক নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়াবিবাদ করত এমনকি দুই বার হত্যার উদ্দেশ্যে মরধরও করে। তারা সব সময় চরিত্রহীন ও পরকিয়ার কথা বলিয়া মিথ্যা অপবাদ দিয়া গালিগালাজ করত।

আমার বোন এসব মিথ্যা অপবাদ সহ্য করিতে না পেরে মনের ক্ষোভে ও দুঃখে নিজ শয়ন ঘরে বাঁশের ডাপের সাথে ওড়না দিয়া গলায় ফাঁস লাগাইয়া আত্মহত্যা করে। পরে আমি আত্মহত্যা সংবাদ পেয়ে আমার আত্মীয় স্বজনসহ বোন সুমিত্রার বাড়ীতে এসে তাকে মৃত: অবস্থা দেখতে পাইয়া থানা পুলিশের সহযোগিতা নেই।

এ বিষয়ে তানোর থানার  দ্বায়ীত্বে থাকা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ওসি রাকিবুল হাসান বিটিসি নিউজকে জানান,  মৃত: সুচিত্রার ভাই নয়নের দেওয়া তথ্যমতে থানার পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে তালন্দ গ্রাম থেকে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসি।

পরবর্তীতে থানার কার্যক্রম শেষ করে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উক্ত অভিযোগে ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়, তাদের মধ্যে ২জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি।

আটককৃতরা হলেন যথাক্রমে, শ্রী মনিল চন্দ্র দাস ও তার স্ত্রী শ্রীমতি আরতী রাণী বাঁকি ৩জন পলাতক, তাদের সকলের বিরুদ্ধে ৩০৬ দন্ডবিধি মোতাবেক মামলা রজু করা হয়। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় এটাই যে মৃতের দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে একজন ১২ বছরের ও আপরজন মাত্র ১২ মাসের। আমরা পলাতক ৩ আসামিকে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আটকের জোর চেষ্টা চালাচ্ছি।

 

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.