রাজশাহীর কাকনহাট পৌরসভা মেয়র’র বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকার দুর্নীতি’র অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রাজশাহীর কাঁকনহাট পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন আব্দুল মজিদ। এর আগেও প্রশাসক ছিলেন ২ বছর। এ পর্যন্ত পৌরসভার ৩টি নির্বাচনের প্রত্যেকটিতেই জয়ী হয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি মেয়রের চেয়ারে রয়েছেন প্রায় ২ দশক ধরে।
নির্বাচিত ৩বারের মধ্যে ১বার আওয়ামী লীগ এবং ২বার বিএনপির মনোনয়ন ও সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হন আব্দুল মজিদ। তবে গতবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র হলেও এবার নৌকার টিকিট পাননি তিনি। ফলে এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
প্রায় ২ দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এই মেয়রের বিরুদ্ধে গত ১৬ বছরে প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে অভিযোগও পড়েছে একাধিকবার। সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ আমিরুল ইসলাম ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোর্তজা শেখ দুদকে অভিযোগ দেন। আগের দিন তারা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, আগে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পকে নতুন করে তালিকায় দেখিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কাঁকনহাট পৌরসভায় ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪টি প্রকল্পের কাজ না করেই তুলে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। বাকি ৯টি প্রকল্পের কাজেও হয়েছে পুকুর চুরি। পৌর মেয়র আব্দুল মজিদ ও সচিব রবিউল ইসলামের যোগসাজশে একই কাজ বারবার বাস্তবায়ন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগে দাবী করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী দুদকে দেয়া পৃথক অভিযোগে দাবী করা হয়েছে, মেয়র ১৫ বছরে ১০ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এর মধ্যে রাজস্ব খাত থেকে আত্মসাৎ করেছেন ৫ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারী উন্নয়ন সহায়তা তহবিল থেকে ৫ কোটি, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ৩ কোটি, ইউজি/আইপি- ২ থেকে ৮ লক্ষ ও ইউজিআইপি-২ থেকে প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
কাউন্সিলর গোলাম মর্তুজা শেখ দাবি করেন, আব্দুল মজিদ ২০ বছর ধরে পৌর মেয়র। এছাড়া তিনি ১৮ বছর ধরে কাউন্সিলর। পৌরসভায় এমন কোনো অনিয়ম নেই যে মেয়র করেননি। তিনি বলেন, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে পৌরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছে। এরপর ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে কোনো কাজ হয়নি। আগের প্রকল্পের ক্রমিক নম্বর বদলে বাস্তবায়ন দেখিয়ে আড়াই কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন মেয়র। কিন্তু ৩ বছর আগে কাজ করেও ঠিকাদাররা বিল পাননি।
উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে মেয়র আব্দুল মজিদ অবশ্য দাবী করেন, পৌরসভার উন্নয়ন করেছেন বলেই বার বার পৌরবাসী তার পক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অপপ্রচারে লিপ্ত। তারাই বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়ে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করছেন।
তিনি বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন পৌরসভার প্রকৌশল দফতরের কাজ। একই প্রকল্প বার বার কীভাবে এলো, বিষয়টি বলতে পারবেন প্রকৌশলী। মেয়র হিসেবে তিনি কেবল তাদের সাজিয়ে দেয়া নথিপত্রে সই করেছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো: জাহিদুল ইসলাম (শিমুল) রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.