রাজশাহীতে করোনা ঠেকাতে রাত জেগে রাস্তা পাহারা দিচ্ছেন পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুইজন রোগী শনাক্তের পর শক্ত অবস্থানে গেছে প্রশাসন। ভাইরাস বহনকারী লোকজন রাজশাহীতে আসা ঠেকাতে রাত জেগে রাস্তা পাহারা দিচ্ছেন পুলিশ। একই সঙ্গে জেলার কিছু কিছু এলাকায় স্থানীয়ভাবে রাস্তায় বন্ধ করে দিয়ে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী।

গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে অন্ধকার। তবে মাঝে মধ্যে দুই-একটি ট্রাক যাচ্ছে। আর মাঝে মাঝে সাইরেন বাজতে বাজতে ছুটে আসছে এ্যাম্বুলেন্স। কখনো কখনো দুই একটা মোটরসাইকেল দেখা মিলছে। তবে সবগুলো গাড়িকে দাঁড়াতে হচ্ছে বেলপুকুর রেলক্রসিংয়ের চেকপোষ্টে।

এই চেকপোষ্টের দাঁড়িয়ে আছেন রাজশাহী মহানগর বেলপুকুর থানা পুলিশের ১০ থেকে ১২ জন সদস্য। তারা কড়া পাহারায় নজর রাখছেন সবগুলো গাড়িকে।

লকডাউনের মধ্যে রাজশাহীতে কেউ যেন বাইরে থেকে এসে প্রবেশ করছে কিনা এটি দেখার জন্য তারা দাঁড়িয়ে আছেন এখানে। এই পুলিশ চেকপোস্ট এর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোনো গাড়ি শহরের ভিতরে ঢুকতে পারছে না শহরে।

রুহুল আমিন নামের এক পুলিশ সদস্য বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কিছু মানুষ এখনো বিভিন্ন জায়গা থেকে চলে আসার চেষ্টা করছেন রাজশাহীতে। তারা কোন পরিস্থিতিতে আসছেন, সেটা আমরা জানি না। কাজেই বাইরে থেকে আসা কাউকেই শহরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে হাসপাতালে যাওয়া রোগীদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন বাইরের জেলা থেকে। তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে।

সেখান থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পশ্চিমে হলো কাপাশিয়া বাজার। এই বাজারে তল্লাশি চৌকি বসিয়ে নিজেই রাস্তায় লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন কাটাখালি থানা পুলিশ। চেকপোস্টের সামনে গাড়ি আসার আগেই দূর থেকে ইশারা করে জানানো হচ্ছে গাড়ি থামাতে। এরপর কেনো শহরে গাড়িটি ঢুকবে, তার যথাযথ কারণ জেনেই কেবল অনুমতি দেওয়া হচ্ছে শহরের দিকে যাওয়ার।

কাটাখালি থানার ওসি জিল্লুর রহমান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, রাজশাহী এখনো করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। এই অবস্থায় যেন আমরা থাকতে পারি, সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এখন বাইরে থেকে কাউকে শহরে প্রবশে করতে দেওয়া যাবে না। এই নির্দেশনায় আমাদের দেওয়া হয়েছে প্রশাসন থেকে। আমরা সেটিই করার চেষ্টা করছি। ফলে রাজশাহীর প্রবেশ পথগুলোতে কড়াকড়ি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কৃষিপণ্য, খাবার গাড়ি এবং জরুরী প্রয়োজনী কাজে ছাড়া কাউকে শহরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর এটি করতে গিয়ে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের কেবল মহানগর এলাকাতেই বসানো হয়েছে ৭ থেকে ৮ চেকপোস্ট। রাত-দিন এসব চেকপোস্টে তল্লাশি করে শহরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ফলে সহজে চাইলেই কেউ শহরে প্রবেশ করতে পারছেন না। এমনকি জেলা শহরের বাসিন্দাদেরও শহরে বাড়ি না হলে প্রবশে করতে দেওয়া হচ্ছে না।

গত দুইদিনে রাজশাহীর বাগমারা ও পুঠিয়া উপজেলায় দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগি শনাক্ত হয়েছে। তারা দুইজনই ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে এসেছেন। এ জন্য বাহির থেকে কেউ যে রাজশাহী প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য কড়াকড়ি আরও বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে মহাসড়কসহ রাজশাহীর সকল প্রবেশ পথ। এছাড়াও পরিবর্তি নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত রাজশাহীকে লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মোঃ মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.