রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ নকল ঔষধ সহ গ্রেফতার-৭

বিশেষ প্রতিনিধি: দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূল’সহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এর’ই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক রাজধানীতেও অভিযান চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ডিএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে ক্যান্সার ও করোনা মহামারিতে বহুল ব্যবহৃত দেশী ও বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ঔষধ এবং ঔষধ তৈরির সরঞ্জাম’সহ ০৭ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের একটি চৌকস ইউনিট।
অভিযানে গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। তরিকুল ইসলাম, ২। সৈয়দ আল মামুন, ৩। সাইদুল ইসলাম, ৪। মনোয়ার, ৫। আবদুল লতিফ, ৬। নাজমুল ঢাল, ৭। সাগর আহমেদ মিলন। এ সময় তাদের হেফাজত হতে যথাক্রমে, (ক) একমি কোম্পানির মোনাস- ৭০০ বক্স, (খ) স্কয়ার কোম্পানির সেকলো- ৫০ বক্স, (গ) জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৭৪৮, (ঘ) বক্সসহ অন্যান্য কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ঔষধ, (ঙ) ঔষধ তৈরির মেশিন, (চ) ডায়াস ও ঔষধের খালি বক্স উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
গত বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) ২০২১  ইং বুধবার ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর কাজলা, আরামবাগ ও মিটফোর্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। আজ শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) ২০২১ ইং বেলা ১১ ঘটিকায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার, বিপিএম (বার)।
এ ব্যাপারে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, একটি অসাধু চক্র নকল ঔষধ বাজারজাত করছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। গত ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ইং বুধবার ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চালিয়ে এই প্রতারক চক্রের ৭ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত তরিকুল ইসলাম ও সৈয়দ আল মামুন কারখানা স্থাপন করে জীবন রক্ষাকারী এ সকল নকল ঔষধ তৈরি করে। সাইদুল ইসলাম এ নকল ঔষধ তৈরির প্রধান কারিগর, মনোয়ার এ্যালো এ্যালো ফয়েল ও আবদুল লতিফ ঔষধের পাতায় ছাপ দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপাদানসহ সিলিন্ডার সরবরাহ করতো। গ্রেফতারকৃত নাজমুল ঢালী ঔষধের বক্সে ছাপ দেয়ার পর তৈরিকৃত এ সকল নকল ঔষধ গ্রেফতারকৃত সাগর আহমেদ মিলনের নেতৃত্বে মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপের মাধ্যমে বাজারজাত করা হতো।
তিনি বলেন, এই সকল ঔষধ এর ইনগ্রিডিয়েন্টস এ মূলত প্রয়োজনীয় কোন সক্রিয় উপাদান থাকে না। এছাড়া মেইন স্টার্চ নিম্ন গ্রেডের ব্যবহৃত হয়। এমনকি স্টেরয়েড ও ডাই ব্যবহৃত হতে পারে। নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের  এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এর মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। এ সকল নকল ঔষধ সাধারণ মানুষের জন্য মরণ ফাঁদ।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব বাজারে ১৪৫ টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ঔষধ। ভেজাল এবং নকল ঔষধ এই সুনাম এবং আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ  করছে।  মফস্বলের ঔষধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে একটি অসাধু সংঘবদ্ধ চক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ঔষধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ ধরণের ওষুধ মাদকের চেয়েও ভয়াবহ।
এসময় তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি কেউ আমাদের নকল ঔষধ কারখানা সমন্ধে অবগত করেন তাহলে আমরা কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
গ্রেফতারকৃ আসামীদের বিরুদ্ধে ডিএমপির বংশাল থানায় দেশের প্রচলিত আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা পরবর্তী সময়ে আসামীদের পুলিশ হেফাজতে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত রুজুকৃত মামলায় আসামীদের  তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.