যে সকল কাজে রোযা ভঙ্গ হয় না এবং রোযা মাকরূহ হয়

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না
মহিমান্বিত মাসসমূহের মধ্যে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ অন্যতম। এ মাসের ইবাদত-বন্দেগীর ফযীলত অন্যান্য মাসের চেয়ে বহুগুণ বেশি। এ মাসে বেশি বেশি তওবা-ইস্তিগফার, ইবাদত-বন্দেগী করে তাক্বওয়া হাছিলের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেজামন্দি-সন্তুষ্টি হাছিল করাই সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য।

পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এ ইবাদতের ফযীলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “রমাদ্বান শরীফ-এ আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমল দশগুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়ে থাকে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)

চলুন জেনে নেই যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না:

১. ভুলক্রমে কোন কিছু পানাহার করলে। অতঃপর শেষ সময় পর্যন্ত পানাহার না করলে।
২. ভুলক্রমে নির্জনবাস করলে।
৩. রোযার মধ্যে দিনে ঘুমালে এবং ঘুমের মধ্যে গোসল ফরয হলে।
৪. আহলিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করার কারণে মনি নির্গত হলে।
৫. শরীরে তেল মালিশ করলে।
৬. শিঙ্গা লাগালে যদিও রক্ত বা পুঁজ বের হয়।


৭. চোখে সুরমা বা ওষুধ দিলে। উল্লেখ্য, ওষুধের স্বাদ গলায় অনুভূত হলে বা সুরমার রঙ থুথুর সাথে দেখা গেলেও রোযা ভঙ্গ হবে না।
৮. আহলিয়াকে বুছা দিলে।
৯. অনিচ্ছাকৃত বমি করলে।
১০. রোযাদারের গলায় অনিচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়া গেলে।
১১. মুখে থুথু এলে বারবার না ফেলে গিলে ফেললে।
১২. রোযা অবস্থায় নখ ও চুল কাটলে।
১৩. রোযাদার ব্যক্তি স্বপ্নে কিছু খেলে বা পান করলে।
১৪. রাস্তায় চলাচলের সময় গাড়ির ধোঁয়া, রান্না করার সময় রান্নার ধোঁয়া নাকে প্রবেশ করলে মাজূর বা অক্ষমতার কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না।
১৫. রোযা অবস্থায় সন্তানকে দুধ খাওয়ালে মায়ের রোযা ভঙ্গ হবে না। এমনকি ওযূও ভঙ্গ হবে না।

যে সকল কাজে রোযা মাকরূহ হয়

. বিনা প্রয়োজনে কোন কিছু চিবালে।
. তরকারীর স্বাদ চেখে ফেলে দেয়া।
তবে স্বামী বদমেজাজী হলে বা গৃহকর্তার ভয়ে জিহবার অগ্রভাগ দিয়ে করলে মাকরূহ হবে না।
৩. কোন ধরণের কয়লা, গুল বা পেষ্ট ব্যবহার করলে মাকরূহ হবে।
আর এর সামান্য কিছু অংশও মুখের ভিতরে গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে।
৪. গোসল ফরজ অবস্থায় সারাদির অতিবাহিত করলে।
৫. কোন রোগীর জন্য নিজের রক্ত দিলে।
৬. মিথ্যা বললে, গীবত করলে, চোগলখুরী করলে বা অনর্থক কথাবার্তা বললে।
৭. ঝগড়া ফ্যাসাদ বা গালি-গালাজ করলে।
৮. ক্ষুধা বা পিপাসার কারণে অস্থরতা প্রকাশ করলে।

৯. মুখে অধিক পরিমাণ থুথু একত্র করে গিলে ফেললে।
১০. দাতে ছোলা বুটের থেকে ছোট কোন বস্তু আটকে থাকলে তা বের না করে,
মুখের ভিতর থাকা অবস্থায় গিলে ফেললে।
১১. উপায় থাকা সত্তেও শিশুর মুখে কোন কিছু চিবিয়ে দিলে।
১২. ঠোটে লিপস্টিক লাগালে তা মুখের ভিতর চলে যাওয়ার আশংকা হলে তা মাকরূহ হবে।
১৩. পায়খানার রাস্তায় শৌচকাজে অতিরিক্ত পানি ব্যবহারে তাতে ভিতরে যাওয়ার সন্দেহ হলে মাকরূহ হবে। এ ক্ষেত্রে রোযা অবস্থায় পানি দ্বারা ধৌত করার পর কোন কাপড়দ্বারা মুছে ফেলাটা উত্তম।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.