ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনা মোতায়েন ও প্রাধান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি

বিএনপি প্রতিবেদকরাজশাহী ৬টি আসনের বিএনপি, ২০দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থীরা আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা দিকে নগরীর কাদিরগঞ্জস্থ একটি কমিউনিট সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন।

এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য এবং রাজশাহী সদর আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জননেতা মিজানুর রহমার মিনু, বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও তানোর-গোদাগাড়ী আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিষ্টার আমিনুল হক, বাগামারা আসনের ধানের শীষের প্রার্থী আবু হেনা, পবা-মোহনপুর আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন ও বাঘা-চারঘাট আসনের ধানের প্রার্থী আবু সাইদ চাঁদ এর ছেলে রাকিব হাসান ওয়ালিদ। পুঠিয়া-দূর্গাপুর আসনের প্রার্থী নাদিম মোস্তফার সমস্যা থাকার কারনে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি।

সম্মেলনে মিনু বলেন, দেশব্যাপি ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রচার প্রচরাণায় বাধা প্রদান, নির্বাচন অফিস ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলছে। এছাড়াও প্রচারনার সময় নেতাকর্মীদের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙ্গচুর, অগ্নিসংযোগ করছে। সেইসাথে রাজশাহীর তানোর-গোদাগাড়ী, রাজশাহী সদর, পবা-মোহনপুর, বাগমারা, পুঠিয়া-দূর্গাপুর ও বাঘা- চারঘাট এই ৬টি আসনে সরকারী দলের প্রার্থীদের নির্দেশে তাদের ক্যাডার বাহিনীরা একই ধরনের তা-ব চালিয়ে যাচ্ছে। এনিয়ে নির্বাচন কমিশন অফিস, সহকারী নির্বাচন অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করে কোন ভাল হচ্ছেনা। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরকারী দলের সন্ত্রাসী ও ক্যাডাদের দৌরাত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণ ভোট দিতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হুমকীতে সাধারণ ভোটারগণ ভীত হয়ে পড়ছে। এই দল প্রতিদিন ধানের শীষের সমর্থকদের বাড়িতে যেয়ে হুমকি অব্যাহত রেখেছে বলে উল্লেখ করেন মিনু।

মিনু আরো বলেন, মিডিয়াগুলো বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা দেখছে। কিন্তু সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারছেনা। কেউ যদি সাহস করে সত্য ঘটনা তার মিডিয়ার তুলে ধরেন তাহলে সেই মিডিয়া ও কর্মীর উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। এই অবৈধ সরকার ও তার আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রহসনের নির্বাচন করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে সুষ্ঠু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরী। যা এই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দিয়ে সম্ভব নয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও আগামীকাল বুধবার থেকে নির্বাচন পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে ম্যাজিষ্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামনোর জন্য দাবী জানান মিনু। সেইসাথে এই সকল অন্যায়, নির্যাতন, অবৈধ গ্রেফতার, পুলিশি হয়রানী বন্ধ এবং লেবেল প্লেইং ফিল্ড তৈরী করতে নির্বাচন কমিশনের নিকট দাবী জানান। সেইসাথে যেকোন মুল্যে নির্বাচন করবেন এবং ২৫১ আসনে বিজয়ী হয়ে সংসদ গঠন করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

ব্যারিষ্টার আমিনুল হক বলেন, তাঁর এলাকায় সকল স্থান থেকে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেছে। নির্বাচনী অফিস ভাঙ্গচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে নৌকার সমর্থক ও নেতাকর্মী। এছাড়ারও নৌকারা প্রার্থী বর্তমান সাংসদ ধানের শীষের এক যুবককে শারীরিক নির্যাতন করছেন। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। সেইসাথে ধানের শীষের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। সর্বপরি তারা ভোট ডাকাতীর মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে বলে জানান তিনি।

আবু হেনা বলেন, বাগামারায় একই অবস্থা বিরাজ করছে। কিছুদিন পুর্বে যুবলীগের এক নেতাকে তাদের দলের সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে খবর প্রকাশিত হয়েছে এবং সেখানকার পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা নিজে স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন। অথচ পুলিশ চার্জসিটে বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি অত্র মামলার সঠিক তদন্ত দাবী করেন। সেইসাথে অত্র এলাকাতে পুলিশি নির্যাতন বন্ধে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তকর্তাদের অপসারণ দাবী করেন।

মিলন বলেন, চলতি মাসের ১১ তারিখ হতে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তা-বলীলা অব্যাহত রয়েছে। মোহনপুর এলাকায় ধানের শীষের প্রায় সবগুলো নির্বাচনী অফিস ভাঙ্গচুর ও অগ্নিসংযোগ, ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন ছিড়ে ফেলা ও ধানের শীষের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের শারীরিক নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখানো অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকার দলীয় বহিনী এই কর্মকা- করছে। শুধু তাই নয় পবার বিভিন্ন এলাকাতে একই ধরনের কর্মকা- অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রাকিব হাসান বলেন, বর্তমান সরকার দলীয় মন্ত্রী এবং তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীদের অত্যাচারে বাঘা-চারঘাটের জনগণ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রচারণায় নামলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। এছাড়াও বিএনপি, ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলছে। সর্বপরি অত্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করছে। তাঁর বাবা ধানের শীষের প্রার্থী আবু সাইদ চাঁদকে ষড়যন্ত করে হাজত থেকে বের করতে দিচ্ছেনা বলে তিনি অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে সকল প্রার্থী এসপি, ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আরএমপি কমিশনার বরাবরে সংবাদ সম্মেলনের কপি এবং সকল প্রাকর নির্যাতন বন্ধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে স্বারকলিপি দেন ও সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন। #( প্রেস বিজ্ঞপ্তি )#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.