মোড়েলগঞ্জে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ চিকিৎসকের যোগদান

মোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে ৫ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘ কয়েক বছর পর ১২ চিকিৎসক নতুন যোগদান করায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

তারপরেও নানাবিধ সমস্যায় জর্জ্জরিত এ হাসপাতালটি। পরিত্যাক্ত ৩১ শর্য্যা পুরাতন ভবনটিতে ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের।

আজ বুধবার (৮ জানুয়ারী) সরেজমিনে জানাগেছে, মোড়েলগঞ্জ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি ৩১ শর্য্যা বিশিষ্ট ভবনটি ১৯৬২ সালে নির্মিত হয়। পরবর্তীতে বর্তমান সরকারের স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে ২০০৯ সালে ১৯ শর্য্যা বিশিষ্ট একটি নতুন ভবন নির্মান হয়।

এ নিয়ে এখন ৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটি। চিকিৎসা সেবায় দীর্ঘদিন ধরে ৫ জন ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত হয়। সেখান থেকে ১বছর পূর্বে মেডিকেল অফিসার ডা. এনামুল কবির অন্যত্র বদলী হয় এবং সদ্য ডা. লিমা ইয়াসমিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী হয়ে যান। এভাবে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে চিকিৎসক শূন্য হয়ে পড়ে এ হাসপাতালটি।

১০ ডিসেম্বর সদ্য যোগদান করেন মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ আহমেদ, ডা. ওমামা হক, ডা. সঞ্চিতা সাহা, ডা. আহাদ নাজমুল হাসান, ডা. খলিদ হাসান, ডা. ফরহানা রহমান, ডা. ফতেমাতুজ জোহরা, ডা. শাওলিন আফরোজ, ডা. আসফাক হোসেন, ডা. রাফসান হোসেন ও ডা. সুমাইয়া ইসমত জাহান।

যোগদানের পরপরই এদের মধ্যে ডা. সুমাইয়া ইসমত জাহান কুষ্টিয়া জেলায় বদলী হয়।

হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, ৩১ শর্য্যা ভবনটি বিভিন্ন স্থানে ধরেছে ফাটল, কয়েকটি রুমে পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। চিকিৎসক বসছে ঝুঁকি নিয়ে সেইসব রুমে। চিকিৎসক সংকট কেটে উঠলেও অফিস সহায়ক ওয়ার্ড বয়, পরিসংখ্যান বীদ, মেডিকেল টেকনিশিয়ান ল্যাব, এনফোর্সমেন্ট, পাবলিক হেলথ এন্ড সহকারি সার্জন, অর্থপেডিকস জুনিয়র কনসালটেন্ট,, চক্ষু বিভাগ জুনিয়র কনসালটেন্ট, সার্জারি বিভাগে জুনিয়র কনসালটেন্ট,, কার্ডিওলজি বিভাগে জুনিয়র কনসালটেন্ট, প্যাথলজী বিভাগে প্যাথলজিষ্ট সহকারি সার্জন, ইউটি বিভাগে জুনিয়র কনসালটেন্ট, হোমিও/আয়ুবেদী/ইউনানী(উন্নয়ন মেডিকেল অফিসার) সিনিয়র স্টাফ নার্স, স্বাস্থ্য পরির্দশক, সহকারী স্বাস্থ্য পরির্দশক, স্বাস্থ্য সহকারী, ড্রাইভারসহ ৫৭ পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে। এছাড়াও ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীর ৯৮টি পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘ যুগ যুগ ধরে।

উপকূলীয় অঞ্চল নর্দী মার্তৃক হওয়ায় এ উপজেলায় হাসপাতালে রোগীদের সুবিধার্থে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সম্প্রতি দেওয়া হয়েছে নৌ-এম্বুলেন্স। এ নৌ-এম্বুলেন্সটি এক মাস অতিবাহিত হলেও এখন চালু হয়নি কার্যক্রম। কমিউটি বেষ্ট হেল্থ কেয়ার(সি বি এইস সি) এ প্রকল্প এম্বুলেন্স চলাচলে হয়নি কোন অর্থ বরাদ্ধ।

এ ছাড়াও এ হাসপাতালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা ০১৯১৪-৮৫৯৭৪১ এ নম্বরটিতে কল করে সেবা পাচ্ছেন এ গ্রামীন জনপদের মানুষেরা। প্যাথলজি বিভাগটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও এখন হয়েছে চালু। এক্সরে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়েছে ২ সপ্তাহ ধরে। প্রতিদিন এ হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা নিচ্ছে প্রায় ২ থেকে ৩শ’ রোগী। ৩১ শর্য্যা ভবনে ২য় তলায় রয়েছে মহিলা ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ড। ১৯ শর্য্যা ভবনে ২য় তলায় রয়েছে ৩টি ওটি রুম ও ৩য় তলায় ১৯টি বেড।

কথা হয় চিকিৎসা নিতে আসা মোসলেম মোল্লা(৬০),বাবু শেখ(২৭) কাশেম মোল্লা(৫৫), রেখা বেগম (৪৫), মহিউদ্দিন শিকারী(২৮), ও সাইফুল ইসলাম, ঠান্ডজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু রহমতুল্লাহ(১০ মাস), মরিয়ম(২ বছর), নুসরাত জাহান(২মাস) এরা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেশী রয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এ হাসপাতালে ১২ জন চিকিৎসক দস্য যোগদান করেছেন। চিকিৎসা নিতে আশা রোগীদের ডাক্তার শূন্যতা আর থাকছেনা। জনগনের দ্বারপ্রান্তে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষে বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে এ নতুন মেডিকেল অফিসাররা কাজ করবেন বলে আশা করছি।

নৌ-এম্বুলেন্সটি চালুকরার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ডিজেল বরাদ্ধ না হলেও স্থানীয়ভাবে এম্বুলেন্সটি চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর মোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি এম.পলাশ শরীফ গনেশ পাল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.