মঠবাড়িয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মারধরের পর হাসপাতালে রেখে উধাও স্বামী!


পিরোজপুর প্র‌তি‌নি‌ধি: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় রাবেয়া বেগম নামের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। পরে আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যান স্বামী। গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে তার।
আহত রাবেয়া বেগম (৩৩) পেশায় পোশাক শ্রমিক। তার বাড়ি চট্টগ্রামের ভাইজিদ এলাকায়। তার স্বামীর শামসু মিয়া (৩৫) পেশায় শ্রমিক। তিনি বড়হারজী গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতাল সূত্র ও গৃহবধূর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১২ বছর আগে পরিচয় হয় ওই দম্পতির। পরে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে মেয়ে সাথী (১০) ও ছেলে মুসার (৭) জন্ম হয়।
সম্প্রতি স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে মঠবাড়িয়া নিজ বাড়িতে চলে আসেন শামসুর। গত ছয় মাস আগে ওই গৃহবধূ অন্তঃসত্ত্বা হন। এরপর থেকে শামসু মিয়া যৌতুকের জন্য তাকে চাপ দেন। গত (১৯ জুন) কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে মারধর করে জখম করেন স্বামী। পরে উপজেলা হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই গৃহবধূকে রেখে পালিয়ে যান শামসু।
অসুস্থ রাবেয়া তিন দিন ধরে হাসপাতালে। তার অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সারোয়ার হোসেন খান সংবাদ কর্মীদের খবর দেন। খবর পেয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজু ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাত জাহান মমতাজ এসে থানায় খবর দেন। সাংবাদিকরা কিশোরী সাথীকে মায়ের পাশে কাঁদতে দেখেনে। পরে দুই ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে সঙ্গে সঙ্গে গৃহবধূর শরীরে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূর বাড়িতে গেলে শামসু পালিয়ে যান। কাউকে না পেয়ে পুলিশ শামসুর বড় ভাইয়ের ছেলে রহিমকে নিয়ে আসেন। ওই সময়ের মধ্যেই সংবাদকর্মীরা হাসপাতালে এলাকার সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক, পুলিশ, ইউএনও দপ্তর ও অন্য দপ্তর থেকে মোট ২৭ হাজার ২০০ টাকা সংগ্রহ করেন। ওই অর্থে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সে করে গতকাল বুধবার গৃহবধূকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মঠবাড়িয়ার সমাজসেবা কর্মকর্তা মোস্তফা ইখতিয়ার উদ্দিন বিটিসি নিউজকে বলেন, ওই গৃহবধূর চিকিৎসার জন্য বরিশাল সমাজসেবা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, গত তিন দিন ধরে অতিরিক্ত রক্তক্ষণে অন্তঃসত্ত্বা রাবেয়ার অবস্থা সংকটজনক। রাবেয়াকে তিন দিন আগে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তার স্বামী বা পরিবারের কেউ এগিয়ে আসেনি।
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. নুরুল ইসলাম বাদল বিটিসি নিউজকে বলেন, গতকাল বুধবার (২২ জুন) বিকেলে খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে শামসুকে না পেয়ে রহিমকে নিয়ে আসেন এবং রাবেয়ার সঙ্গে বরিশালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর পিরোজপুর প্রতিনিধি মো. মনিরুল ইসলাম মনির। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.