ব্রেক্সিটের জট ছাড়াতে লন্ডনে শীর্ষ বৈঠক

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২০ সালে ব্রেক্সিট কার্যকর হলেও ব্রিটেনের উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশকে ঘিরে জটিলতা এখনো কাটেনি। সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট লন্ডনে বোঝাপড়ার ঘোষণা করতে পারেন।
ব্রেক্সিটের কালো ছায়া ব্রিটেনের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রের ঐক্যের উপর থেকে দূর হচ্ছে না। ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বাজার নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় ব্রিটেনে একাধিক সংকট দেখা যাচ্ছে। তার উপর ইইউ-র সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির বদলে ব্রেক্সিট চুক্তিকে ঘিরে লাগাতার উত্তেজনাও সে দেশের জন্য ক্ষতিকারক হচ্ছে। চুক্তির নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড প্রোটোকলকে ঘিরে উত্তেজনা কাটাতে সোমবার লন্ডনে শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক বসছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন সোমবারই সম্ভবত ব্রেক্সিট নিয়ে বিরোধ মেটাতে নতুন বোঝাপড়ার ঘোষণা করতে পারেন। তবে সাফল্য এলেও সেই ব্যবস্থা উত্তর আয়ারল্যান্ডে অচলাবস্থা কাটাতে পারে কি না এবং ব্রিটেনেও সমালোচকদের শান্ত করতে পারে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।
ফন ডেয়ার লাইয়েনের সঙ্গে আলোচনার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক ডেকে বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারেন। তারপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতা সাফল্য ঘোষণা করতে পারেন। ব্রিটিশ সংসদেও সুনাক সে বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে সরকার বিষয়টি নিয়ে সংসদে ভোটাভুটির কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে শোনা যাচ্ছে।
চূড়ান্ত বোঝাপড়ার আভাস দিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বলা হয়েছে, যে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে পণ্য চলাচলের ক্ষেত্রে হাতেনাতে যে সব সমস্যা দেখা দিচ্ছে, ঋষি সুনাক তা দূর করতে চান। তাছাড়া যুক্তরাজ্যের মধ্যে উত্তর আয়ারল্যান্ডের অবস্থান জোরালো করে সেঅ প্রদেশের জনগণের হাতে সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দেবার উদ্যোগও নিচ্ছেন তিনি।
ব্রিটেনের বর্তমান সংকটের কারণে রাজনৈতিক আঙিনায় কোণঠাসা হয়ে রয়েছে সুনাকের টোরি পার্টি। জনমত সমীক্ষায় বিরোধী লেবার পার্টি অনেক এগিয়ে রয়েছে। ব্রেক্সিট চুক্তির সংশোধনকে সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে সেই ব্যবধান কমাতে চান প্রধানমন্ত্রী।
তবে ইইউ-র সঙ্গে বোঝাপড়ার মাধ্যমে কিছু বাস্তব সমস্যা দূর হলেও উত্তর আয়ারল্যান্ডের ব্রিটেন-পন্থি ডিইউপি পার্টি আবার ক্ষমতা বণ্টনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। ব্রেক্সিট চুক্তি অনুযায়ী উত্তর আয়ারল্যান্ড কার্যত ইইউ-র একক বাজারের অংশ থেকে যাওয়ায় এবং ব্রিটেনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ব্যবধান দূর না হওয়ায় সেই দলের ক্ষোভ দূর হচ্ছে না।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক জট দূর না হলে প্রধানমন্ত্রীর টোরি পার্টির মধ্যে ইউরোপ-বিরোধী অংশেও বিদ্রোহের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ২০১৬ সালে গণভোটের মাধ্যমে ব্রিটেনের মানুষ ইইউ ত্যাগের পক্ষে রায় দেবার পর থেকে দলের মধ্যে তীব্র বিভাজন সরকারের কাজকর্মে অচলাবস্থা সৃষ্টি করে আসছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.