নিজস্ব প্রতিবেদক: কলেজের ল্যাবরেটরিতে ব্যবহারিক (প্র্যাকটিক্যাল) ক্লাস করতে চাওয়ায় শিক্ষার্থীর মা-বাবাকে তুলে গালাগাল করেছেন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক নার্সিং কলেজের (আইবিএনসি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর সিদ্দিক। এসময় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে তাদের ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি দেন ওই কর্মকর্তা।
এ ঘটনায় আজ শনিবার (০৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) ভিসি এবং ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের (আইবিএফ) চেয়্যারম্যানকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে জড়িত কর্মকর্তাকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশন পরিচালিত রাজশাহী আইবিএনসিতে বিএসসি বেসিক ও পোস্ট বেসিক এবং ডিপ্লোমা ইন নার্সিং চালু রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ থাকলেও ননটেকনিক্যাল প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর সিদ্দিক সবকিছু দেখভাল করেন। এ কারণে ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের তার সাথেই যোগাযোগ করতে হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২ নভেম্বর বিএসসি নার্সিং প্রথম বর্ষের ক্লাস ক্যাপ্টেন পাঠদান চালু ও ল্যাবরেটরিতে ব্যবহারিক ক্লাসের অনুমতি চাইতে অফিসে যান। এসময় তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর সিদ্দিক। একপর্যায়ে তার পিতা-মাতাকে তুলে গালিগালাজ শুরু করেন।
এ খবর পেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে অফিসে গেলে তিনি তাদের ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি দেন। তবে ক্লাস নিয়মিতকরণের আশায় তারা কোথাও অভিযোগ দেননি। কিন্তু দীর্ঘ একমাস অপেক্ষার পর গত ২ ডিসেম্বর সকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের অনুমতির জন্য অফিসে গেলে তানভীর পুনরায় তাদের ফিরিয়ে দেন। পরে ক্লাস ক্যাপ্টেনের পিতাকে টেলিফোন করে ভ্রান্ত কথাবার্তাও বলেন তানভীর।
সূত্র জানায়, কলেজটিতে তানভীর সিদ্দিক যোগদানের পর শুরু করেন নানা অনিয়ম। তার নির্দেশনায় কলেজ হোস্টেলে সরবরাহকৃত অস্বাস্থ্যকর ও নিম্ন মানের খাবার খেয়ে গতবছর প্রায় ৩০ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়। কিন্তু তানভীর সিদ্দিকের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। পরে ছাত্রীদের অনেকে বাধ্য হয়ে হোস্টেল ত্যাগ করেন।
এছাড়া ওই বছরের ডিসেম্বরে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় কয়েক ব্যাচের মিডটার্ম পরীক্ষা। যার রেজাল্ট এক বছরেও প্রকাশ করা হয়নি। ওই পরীক্ষার কোনো ডকুমেন্ট নেই বলে শিক্ষার্থীদের সাফ জানিয়ে দেয়া হয়। অথচ প্রায় এক লাখ টাকা পরীক্ষার ফি পরিশোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, দুর্নীতিবাজ তানভীর সিদ্দিকের কারণে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। পড়ালেখায় বিঘœ ঘটছে। দীর্ঘদিন ক্লাস বন্ধ থাকায় ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা চিন্তিত। এসব বিবেচনায় তানভীর সিদ্দিককে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজশাহী আইবিএনসি‘র প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করেন। এধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোস্তাক হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, অফিসিয়াল কাজে আমি ঢাকায় আছি। শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের কপি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.