বেলকুচির চরাঞ্চলের একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ী

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার সুবিধা ও উন্নয়ন বঞ্চিত চরাঞ্চলের বাহনের মাধ্যম একমাত্র ঘোড়ার গাড়। চরাঞ্চলের মানুষের নিকট এখন ঘোড়ার গাড়ীর কদর বেড়েছে। আর্থিক ভাবে সচ্ছল হয়েছেন চরের ঘোড়া চালকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন যমুনা নদীর চরে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের মালামাল পরিবহনের বাহন হিসেবে একমাত্র সম্বল ঘোড়ার গাড়ী। চরাঞ্চালে খানাখন্দে ভরপুর বালিময় রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রাক যাওয়া অসম্ভব সেই সকল রাস্তায় জনপ্রিয় বাহন হিসেব ঘোড়ার গাড়ীর অনেক কদর বেড়েছে।
বেলকুচি উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে বেলকুচি ও বড়ধুল দু’টি ইউনিয়নের সবটুকুই চর। এসব চরে সিংহভাগ রবি শস্য উৎপাদন হয়। পাট, আলু, বাদাম, ভূট্টা,গম,ডাল এসব অর্থকরী ফসল পরিবহনের একমাত্র বাহন হিসাবে ঘোড়ার গাড়ী একমাত্র ভরসা।
কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল ঘোড়ার গাড়ীতেই হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করছেন। আর ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে ফসল বিক্রি করতে হয় না। উপজেলার দুই ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কৃষকরা একদিকে যেমন উৎপাদিত ফসল হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন তেমনি কৃষি উপকরণ সার বীজসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে ঘোড়ার গাড়ী করেই নিয়ে যাচ্ছেন। ঘোড়ার গাড়ীর মালিকরাও অর্থ উপার্জন করে সুন্দর ভাবে সংসার চালাচ্ছে। এ অঞ্চলের ঘোড়া চালকরা এখন আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই।
ভেন্নাবাড়ী চরের ঘোড়ার গাড় চালক শাহদাত হোসেন জানায়, প্রতিদিন গড়ী দিয়ে গড়ে ৮ থেকে ৯ শত টাকা উপার্জন করা যায়। ঘোড়ার পিছনে দৈনিক দেড় থেকে দইশত টাকা ব্যয় করতে হয়। বাকি টাকা দৈনিক আয় হয়ে থাকে।
বড়ধুল চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক বাবলু বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শ্রমিকের কাজ করে সংসার ঠিকভাবে চালানো সম্ভব হতো না। এখন ঠিকভাবে সংসার চালিয়ে আয় করছি ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে। দৈনিক যে রোজগার হয় তাতে আর কারো মুখাপেক্ষি হতে হয় না। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ ও জামা-কাপড় না চাইতেই দিতে পারছি।
ভাঙ্গাবাড়ী চরের ঘোড়ার গাড়ি চালক কিসমত আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান,যেখানে ইঞ্জিন চালিত কোন যানবাহন চলছেনা সেখানেও ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে নির্বিঘ্নে ফসলাদি পরিবহন করছি। এ কারণে চরের মানুষের কাছে ঘোড়ার গাড়ী জনপ্রিয় পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। এ দু’টি ইউনিয়নের চরে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ টি ঘোড়ার গাড়ী পরিবহনের কাজে ব্যবহার হয়।
বড়ধুল চরবেল চরের কৃষক শহিদুল ইসলাম, সেরাজুল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ঘোড়ার গাড়ীতে ধান, পাট,গম,ভুট্টা ও শাকসব্জি বহন করে সরাসরি বাজারে নিয়ে বিক্রি করছি। তাতে ভালো দামও পাচ্ছি এবং আর্থিকভাবে আমরা ভালো আছি। ইতিপূর্বে শ্রমিকের কাজ করতাম তখন আমাদের দিনপাত চলতো না। এখন আমরা অর্থের মুখ দেখছি কারো নিকট হাত পাততে হয়না। ফড়িয়া ব্যরসায়ী আর আমাদের ঠকাতে পারছেনা। মোট কথা ঘোড়ার গাড়ী এখন চরাঞ্চলের পরিবহনের একমাত্র ভরসা।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি এম মুছা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.