বুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, কাল আবার বিক্ষোভ

বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশের প্রতিবাদে ডাকা আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তারা আজকের মতো আন্দোলন স্থগিত করেন।
দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আজ সকাল ৭টায় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। আজ তারা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে দাবির বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাননি। আন্দোলনরত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আজ কর্মসূচি শেষ করা হয়েছে। তারা আগামীকাল রবিবার একইভাবে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে সকাল ৭টা থেকে বুয়েটের শহীদ মিনারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও গত বুধবার মধ্যরাতের পর বহিরাগত কিছু নেতা-কর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান।
এর আগে সকাল থেকেই ছয় দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পাদদেশে অবস্থান নেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের প্রবেশের মাধ্যমে বুয়েটে একটি কুচক্রী মহল ছাত্র রাজনীতি চালু করার অপচেষ্টা করছে।
আবরার হত্যার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। আর ছাত্রলীগ নেতাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি।
এরপরই ছাত্র রাজনীতি বন্ধসহ ছয় দফা দাবি পেশ করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হলের আবাসন বাতিল; ইমতিয়াজ রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিল তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম থেকে বহিষ্কার; বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তারা কেন কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেল এ ব্যাপারে বুয়েট প্রশাসনের সুস্পষ্ট সদুত্তর ও জবাবদিহি, উল্লিখিত দাবিগুলো আজ শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের পদত্যাগ; ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং এর প্রতিবাদ হিসেবে আজ ও আগামীকালের টার্ম ফাইনালসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না এ মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলনের মুখে রাতেই ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বির আবাসিক হলের আসন বাতিল করে প্রশাসন। পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করার কথা জানানো হয়েছে। গতকাল রাত ১০টার দিকে বুয়েট প্রশাসন নোটিস বোর্ডে এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেয়। ইমতিয়াজ রাব্বি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (ঢাকা) প্রতিনিধি মো. আনোয়ার হোসেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.