বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিনের মৃত্যু: এখন পর্যন্ত যা জানা গেল

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। গতকাল বুধবার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গগামী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানে সাতজন যাত্রী ও তিনজন ক্রু ছিল। যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন প্রিগোজিন ও ওয়াগনারের উপপ্রধানও।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ব্যক্তিগত বিমানটি উড্ডয়নের আধা ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওই উড়োজাহাজে আগুন ধরে যায়। এখন পর্যন্ত ১০ জনেরই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রিগোজিনির মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা
ধারণা করা হচ্ছে, প্রিগোজিন মারা গেছেন। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। একটি মরদেহকে তারা প্রিগোজিনের বলে ধারণা করছেন। তবে ডিএনএ পরীক্ষার আগে নিশ্চিত করতে চাইছেন না রুশ কর্মকর্তারা।
তবে ওয়াগনার গ্রুপের টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন থেকে প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এক পোস্টে তারা জানায়, ‘ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান, রাশিয়ার প্রকৃত নায়ক, একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ইয়েভগেনি ভিকতোরোভিচ প্রিগোজিন রাশিয়া বেইমানদের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।’
কে এই প্রিগোজিনি
প্রিগোজিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। বিমান বিধ্বস্তের সময় দেশটির কার্স্ক শহরে একটি সভায় বক্তব্য রাখছিলেন পুতিন। তবে বিধ্বস্তের ঘটনা নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
যেভাবে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি
ইতিমধ্যে এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রাশিয়া। দেশটি জানায়, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটি প্রিগোজিনের ব্যক্তিগত বিমান ছিল। সেখানে সাতজন যাত্রী ও তিনজন ক্রু ছিল।
রুশ রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, উড্ডয়নের আধঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। গ্রে জোনের দাবি, গুলি করে বিমানটি ভূপাতিত করা হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাডার থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ৩০ সেকেন্ড আগেও বিমানটি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। এর পর আকস্মিক উড়োজাহাজটি তার উড্ডয়নের উচ্চতা ২৮ হাজার ফুট থেকে খাড়াভাবে আট হাজার ফুট নেমে যায়।
বিমান চলাচল পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা ফ্লাইটরাডার২৪ এর শীর্ষ কর্মকর্তা আন পেটচেনিক বলেন, যা ঘটেছে তা খুবই দ্রুততম সময়ে ঘটেছে। এমন আকস্মিক পতনের আগে উড়োজাহাজটিতে তেমন সমস্যা ছিল না।
রাশিয়া কী বলছে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো এই দুর্ঘটনা নিয়ে নীরব রয়েছেন। ক্রেমলিন দুর্ঘটনার কথা বললেও প্রিগোজিনের বিমানে থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলেনি।
বিমান বিধ্বস্ত নিয়ে একটি অপরাধমূলক মামলা করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল পৌছেছে এবং ফরেনসিক পরীক্ষা করে দেখছে।
যুক্তরাষ্ট্র কী বলছে
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার নেপথ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের হাত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, প্রিগোজিনের সম্ভাব্য মৃত্যুর খবরে আমি অবাক নই ‘
নেভাদায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন,‘মস্কোর বিরুদ্ধে ওয়াগনারের বিদ্রোহের পর যে প্রিগোজিন রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তু হবে তা আমি আগেই ধারণা করেছিলাম। আমি জানি না কী ঘটেছে, কিন্তু আমি অবাক নই।’ #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.