বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবী

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বর্তমানে “টক অফ কান্ট্রি” তে পরিণত হয়েছে। সকল শ্রেণী পেশার মানুষের একটাই আলোচনা বাজারের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে বাজেট ঘাটতির মুখে পড়েছেন বেশির ভাগ মানুষ। চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পর এখন কিছু কমলেও অন্যসব পণ্যের দাম বেশ চড়া। ফলে আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক বাজারে এক বছর ধরে চালের দাম কমলেও দেশের বাজারে চড়া। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন প্রতি টন চাল ৩৬০ থেকে ৩৮১ মার্কিন ডলার যা গত বছর এই সময়ে ছিল ৩৭৪ থেকে ৪৭৭ ডলার। এ হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ১৫ শতাংশ। আর দেশের বাজারে সরু চাল ৫৮-৬৮ টাকা ও মোটা চাল ৪৬ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা গত বছর ছিল যথাক্রমে ৫৬-৬২ টাকা ও ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বার্ষিক প্রতিবেদন মতে করোনার কারণে গত বছর দেশে সব ধরনের চালের দাম আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে গড়ে ২০ শতাংশ। আর বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর নাজিরসাইল ২৫ শতাংশ, মিনিকেট ১০ শতাংশ আর গুটি-স্বর্ণা চালের দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ। এ অবস্থায় চাল আমদানি শুরু হওয়ায় এখন বাজারে দাম কিছুটা কমেছে।
অথচ দেশে চালের চাহিদার চাইতে উৎপাদন বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে দেশে ১৭ কোটি জনসংখ্যা ধরে বাৎসরিক চালের চাহিদা ২ কোটি ৫৮ লাখ টনের কিছু বেশি। আর কৃষি মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাবে গত অর্থ বছরে দেশে চাল উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টন।
অন্যদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় গত জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৫১ হাজার টন চাল আমদানির তথ্য জানিয়েছে। পাইপলাইনে আছে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার টন। বর্তমানে সরকারের গুদামে চাল রয়েছে ১৪ লাখ ৪৫ হাজার টন আর ধান রয়েছে ১৯ হাজার টন। এ অবস্থায় বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ নেই। অথচ আমদানি করেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হচ্ছে। এমন অবস্থার ব্যাখ্যা কি? তাহলে কি এসব তথ্যের সাথে বাস্তবতার মিল নেই!
এ বিষয়ে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের বক্তব্য পরিষ্কার। সরকারের মজুদ কমে যাওয়া ও বাজারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ না থাকাকে দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলা হয়েছে। এছাড়া বড় মিল মালিকদের মজুদদারি রুখতে মজুদ নীতিমালার পরিবর্তন ও শক্তিশালী মূল্য কমিশন গঠনের কথাও বলা হয়েছে।
শুধু কি চাউল? এমন কোন পণ্য নেই যার মূল্য বৃদ্ধি পায় নি।চিনি,সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ,মরিচ, থেকে শুরু করে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজিও পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় সব থেকে বিপদে পড়েছে দিন আনে দিন খায় টাইপের খেটে খাওয়া মানুষ।
দেশের জনগণ অত কিছু বোঝে না।তারা কার্যকর পদক্ষেপ চাই। আর এই বিষয়ে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। যারা সিন্ডিকেট করে মূল্য বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে।বাজার নিয়ন্ত্রণে এসব পদক্ষেপ বিবেচনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কার্যকর ব্যবস্থা ছাড়া যে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।তাই খেটে খওয়া আপামর জনসাধারণের কথা চিন্তা করে কিভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই উদ্যোগ নিতে হবে এটাই সাধারণ মানুষ তথা সময়ের দাবী।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো: মাইনুর রহমান (মিন্টু) রাজশাহী।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.