বাগমারায় শীতের তীব্রতা কমাতে কম্বলের পরিবর্তে আগুন পোহায় কৃষক ইসমাইল


বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধি: ‘আমরা কোন দিন একটা কম্বলও পায় না, আমার মা কত চাছলো একটা কম্বল। বাপ মরার আগেও কম্বল চাইয়া-চাইয়া পায়নি। কত কছনু মেম্বর আর চেয়ারম্যানকে কেউ দেয়নি। সকালে খুব শীত তাই আগুন পুয়াত্তিরে বা!।’
কথাগুলো বলছিলেন, উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের বালানগর গ্রামে কৃষক ইসমাইল হোসেন।
সোমবার (৩১ জানু) সকালে শীত নিবারনে বাড়ি পার্শ্বে খড়ে আগুন দিয়ে শরীর তাপাচ্ছিলেন তিনিসহ কয়েকজন লোক। হাড় কাপানো শীতে ইসমাইল হোসেনের মত অনেকে শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
মাঘের মাঝামাঝিতে দ্বিতীয় দফায় শৈত্যপ্রবাহে শীত আর উত্তরে হিমেল হাওয়ায় রাজশাহীর বাগমারায় শীত জেঁকে বসেছে। শীতে জবুথবু উপজেলাসহ পার্শ¦বর্তি এলাকার মানুষ। শীতে দিনমজুর, গরীব ও অসহায়দের দিন যাপনে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাইরে কাজে যেতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপন করছেন।
সোমবার সকালে উপজেলার বালানগর গ্রামে শীত নিবারন করতে আগুন জ্বালিতে শরীরে তাপ নিচ্ছেন ইসমাইলের পরিবারসহ কয়েকজন প্রতিবেশী। শীত থেকে বাঁচতে সরকারী ভাবে এলাকায় কোন কম্বল তাঁরা পায়নি বলে অভিযোগ করেন। ইসমাইল হোসেন জানান, সরকারী ভাবে বিভিন্ন এলাকায় মেম্বর ও চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কম্বল দেয়া হয়। তাঁরা বহুবার আবেদন করেও তা পায়নি। এমনকি তার মৃত মা-বাবার জন্য চেয়ে পায়নি বলে আক্ষেপ করেন। তাই অতি শীতে সকাল-সন্ধ্যায় আগুন জা¡লিয়ে শীত নিবারন করে কৃষক ইসমাইল।
এ দিকে অতিরিক্ত ঘনকুয়াশায় মওসুমের আলুর ক্ষেত ও বোর ধানচাষ নিয়ে নিয়ে বিপাকে রয়েছেন এলাকার কৃষকরা। নন্দনপুর গ্রামের কৃষক আজাদ আলী, মাঝগ্রাম গ্রামের দুলাল উদ্দিন ও দেউলিয়া গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে মাঠে যেতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া ভ্যাবসা আবহাওয়া ঘনকুয়াশায় আলু, পেঁয়াজ ও ধান ক্ষেতে ঘন কুয়াশায় মড়ক লাগার সম্ভবনায় ভাবছেন তাঁরা।
এছাড়া বিগত এক সপ্তাহ পর আবারো শৈতপ্রবাহে গত ৩ দিনে ঠান্ডায় নিমোনিয়া, আ্যজমা, আমাশা ডাইয়েরিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। অসুস্থদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু ও বৃদ্ধ। বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত শীতের কারণে নিমোনিয়া, আ্যজমা, আমাশা, ডাইয়েরিয়াসহ বিভিন্ন রোগীই বেশী। এর মধ্যে সর্বত্র করোনাভাইরাসের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
শীতজনিত কারণে গত এক সপ্তাহে অর্ধশত লোক বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম (৮০), ওমর আলী (৫০) ও তার কন্যা (১৫) জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গোপালপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক রেজাউল করিম, আলতাফ হোসেনসহ এলাকার জালাল উদ্দিন, এরশাদ আলীসহ বেশ কয়েকজনের অসসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে।
রোববার ডাইয়েরিয়া রোগী উপজেলার বালানগর গ্রামের মকবুল হোসেনের স্ত্রী সারেবান বাগমারা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া উপজেলার কয়েকটি ক্লিনিকে শিশু ও বৃদ্ধ শীতজনিত কারণে অসুস্থতায় ভর্তি রয়েছে। অনেকে নিজ বাড়িতে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: গোলাম রাব্বানী জানান, শীতর কারণে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রার্দুভাব বেশী। শীতে সাবধানে চলাচলে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মোঃ আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.