বাগমারায় মাঠে মাঠে দুলছে সোনালী ধানের শীষ, কৃষকের বেশী ফলনের স্বপ্ন

 


বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় মওসুমের ইরি-বোরো ধানের পাকা শীষ দেখে ভালো ফলনের আশায় বুক বেধেঁছে কৃষকরা। মাঠের পর মাঠ জুড়ে এখন পাকা সোনালী ধানের দৃশ্য। দুই-তৃতীয়াংশ জমির ধান পেকেছে।
পাশ্ববর্তি নাটোরের বিলহালতি ও আত্রাই উপজেলায় ধান কাটা-মাড়া নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত থাকলেও বাগমারা এলাকায় এক সপ্তাহ পর থেকে এসব ধান কাটা-মাড়া শুরু হবে। গত বছর করোনাভাইরাসের কারণে জন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। শ্রমিক সংকটে কৃষকের স্বপ্নের ফসল তুলতে অতিরিক্ত মুজুরীতে লোকসান গুণতে হয়েছে।
তবে এবারে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ও শ্রমিক সংকট না হলে মাঠ থেকে সময়মত ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলেই এলাকার কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১৬ হাজার ১শত ১৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। উপজেলার বালানগর, দেউলিয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর বীজ সংকট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধান চাষে প্রায় অর্ধেক উৎপাদন হয়েছিল। এবারে কৃষকরা পুষিয়ে নিতে গত বছরের থেকে বেশী ধান চাষ ও উৎপাদনে তারা ঝুঁকেছে।
উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের বালানগর গ্রামের মজিবর রহমান, মফিজ উদ্দিন, আলতাফ হোসেনসহ কয়েকজন কৃষক বিটিসি নিউজকে জানান, জমির ধান পেকে উঠেছে। দু’একজন আগাম জাতের ধান কাটলেও আগামী এক সপ্তাহ পরই পুরা দুমে ধান কাটা-মাড়া লেগে যাবে। এবারে এলাকায় জমির ধান এক সঙ্গে পেকে উঠেছে। ধানের রকম-সকম দেখে ভালো ফলন হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন। তবে দেশের বিভিন্ন জেলায় বৈরি আবহাওয়া ঝড়, শিলাবৃষ্টিসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এই এলাকার কৃষকরা মৌসুমের বোরো ধান নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন।
এছাড়া অসময়ে কয়েক দফা বৃষ্টিতে নদীর পানি বৃদ্ধি ও বারনই নদীতে রাবার ড্যাম না তোলায় কৃষকরা বিলের ধান ডুবে যাবার শঙ্কায় ভুগছেন। কৃষকদের অভিযোগ সেচ কাজে এখন তেমন নদীর পানির প্রয়োজন নেই। অধিকাংশ ধান সেচ গভীর নলকুপ ও বাড়ির ইলেকট্রিক পাম্প দিয়ে সেচ দেয়া হয়।
তাছাড়া শেষ সময়ে নদীর রাবার ড্যাম ফেলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কৃষকদের দাবি একটি মহল নদীতে মাছ ছেড়ে মাছ আহরনের উদ্দেশ্যে রাবার ড্যাম নামাতে দিচ্ছে না। মাছের লাভের চেয়ে কৃষকদের স্বপ্নের ফসল মুছে দিতে চক্রটি অপচেষ্টায় রয়েছেন বলে তারা দাবি করেন। বিলের ধান রক্ষার্থে একাধিক বার রাবার ড্যাম নামানোর আবেদন করেও প্রশাসনের নজরদারিতে কোন কাজ হয়নি বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিটিসি নিউজকে বলেন, রাবার ড্যাম উপজেলার শেষ সীমানা কামারখালিতে। যা পুঠিয়া ও নলডাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তি এলাকায় হওয়ায় তা নিয়ন্ত্রনে তারা বিড়ম্বনায়। তবে রাবার ড্যাম নামানোর বিষয় কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া মৌসুমে ধান কাটা-মাড়া শ্রমিক সংকট নিরশনে তিনি হারবেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছেন। উপজেলায় তেমন ধান কাটা শুরু হয়নি, পুরা ধান কাটা শুরু হলে তিনি উপজেলায় ভুর্তুকির দেয়া হারবেস্টার মেশিন এলাকায় ফিরিয়ে নিয়ে কৃষকদের ধান কাটা-মাড়ায় সহযোগীতা করা হবে বলে জানিয়েছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মোঃ আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.