বাগমারায় প্রশিক্ষণ কক্ষে শিক্ষক অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন


বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাগমারায় শিক্ষকদের মৌলিক প্রশিক্ষণের সময়ে আজ রোববার এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। ওই শিক্ষকের নাম হাফিজুর রহমানকে (৫০)।
তিনি উপজেলার কাতিলা সবুজ সংঘ স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তাঁর বাড়িও উপজেলার কোনাবাড়িয়া গ্রামে। রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণ কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। শিক্ষকের আকষ্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিক্ষক সমাজে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সারা দেশের ন্যায় বাগমারায় মাধ্যমিক পর্যায়ে বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখার আলোকে শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এতে ৬ শত ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়।
শনিবার ছিল প্রশিক্ষণের চতুর্থ দিন। উপজেলার ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণে অন্যদের সঙ্গে কাতিলা সবুজ সংঘ স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমানও অংশ নেন।
সহকর্মী প্রশিক্ষণার্থী বড়বিহানালী উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মতিউর রহমানসহ অন্যরা জানান, অন্য দিনের ন্যায় গতকাল শনিবার সকালে হাফিজুর রহমান তাঁদের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেন। সকাল ৯টা থেকে এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণের শুরুতে আগের দিনে অভিজ্ঞতা বিনিময় করছিলেন প্রশিক্ষণার্থীরা।
শিক্ষক হাফিজুর রহমানেও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কথা ছিল। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কক্ষের মেঝেতে তিনি লুটিয়ে পড়েন। পরে অচেতন অবস্থায় সহকর্মীরা তাঁকে অচেতন অবস্থায় দ্রæত উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শিক্ষকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক সমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাৎক্ষণিক প্রশিক্ষণ বন্ধ হলেও কিছু পরে আবারো শুরু করা হয়। নিকটতম কয়েকজন সহকর্মীরা হাসপাতালে তাঁকে দেখার জন্য ছুটে যান। প্রশিক্ষণের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে শিক্ষকেরা এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন ও প্রয়াত শিক্ষকের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া তাঁর সহকর্মী নাসরিন খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, হাফিজুর রহমান তাঁর পাশেই ছিলেন।
কিছুক্ষণ পর সামনে গিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কথা ছিল, তাঁর ডাক পড়ার আগেই পরবারের ডাকে চলে গেলেন।

কাতিলা সবুজ সংঘ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মজনু মোহাম্মদ বলেন, হাফিজুর রহমান শারীরিক ভাবে সুস্থ ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি এক ছেলে ও মেয়ে সন্তানের বাবা ছিলেন। শিক্ষক হিসাবেও ভালো ছিলেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মাহমুদ হাসান বলেন, শিক্ষক হাফিজুর রহমানের অকাল মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর। অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আগে থেকেই অসুস্থতার কারণে তিনি একটু অসুস্থবোধ করছিলেন বলে ওই কক্ষের সহকর্মীরা জানিয়েছেন। এ কারণে প্রশিক্ষক তার প্রতি সদয় ছিলেন। কিন্তু তার পরে এ ভাবে তিনি মারা যাবেন তা কেউ ধারণা করতে পারেনি।
তাঁর মৃত্যুতে তিনি শোক সন্তাপ্ত পরিবারে প্রতি সমবেদনাসহ রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন। এছাড়া সকল প্রশিক্ষণার্থী ও প্রশিক্ষকদের নিয়ে তিনি দুপুরে ওই প্রশিক্ষণরত স্কুলে এক বিশেষ মোনাজাতের ব্যবস্থা করেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগমারা প্রতিনিধি মো: আফাজ্জল হোসেন / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.