বিশেষপ্রতিনিধি: বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন স্থাপনায় নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে পেশাদার ও প্রশিক্ষিত আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উভয় প্রস্তাবেই মালয়েশিয়া ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
আজ রবিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইলের মধ্যে বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রত্যাশার জবাবে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তার দেশেও রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছেন এবং আশ্রিতদের মানবিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে তার দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়া জোরালো ভূমিকা পালন করবে।
বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন, শ্রমিক সম্পর্কিত বিষয় এবং দুই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা, জ্ঞান ও তথ্য বিনিময় বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
দুই মন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া যে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় তা উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আলোচনায় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানানো হয়। প্রশিক্ষণ প্রদানসহ দুই দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক জ্ঞান ও তথ্য বিনিময়ের বিষয়েও দুই মন্ত্রী একমত হন।
মালয়েশিয়ার বিভিন্ন স্থাপনায় নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে পেশাদার ও প্রশিক্ষিত আনসারসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়োগের অনুরোধ জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। জবাবে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে নিরাপত্তারক্ষী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন—স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নুরুল আনোয়ার, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার, অতিরিক্ত আইজিপি স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলে মালয়েশিয়ার পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত হাসনা হাসিমসহ মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.