উজিরপুর প্রতিনিধি: বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা । নিজ পিতা ও ভাইকে কুপিয়ে আহত করে হত্যাকারী। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায় বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ব্রাম্মনদিয়া গ্রামের চানমুদ্দিন সিকদারের ছোট ছেলে নান্টু সিকদার (৩০) বুধবার রাত ১১টার দিকে তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম (২২)কে পরিকল্পিত ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এসময় তার পিতা চানমুদ্দিন সিকদার এবং বড় ভাই মিন্টু সিকদার বাধা দিলে তাদেরকেও কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে।
নিহত মাহমুদা বেগম পার্শবর্তী গৌরনদী থানার শরিকল ইউনিয়নের কুরিরচর গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমানের মেয়ে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ১৬ জুন নিহতের বড় ভাই মোঃ নূরে আলম বাদী হয়ে বাবুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বাবুগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে নান্টু সিকদার মাহমুদাকে দা দিয়ে কোপাতে শুরু করলে মাহমুদা ডাকচিৎকার দিয়ে ঘরের বাহিরে পালানোর চেষ্টা করে। চিৎকার শুনে শশুর এগিয়ে আসলে তাকেও দা দিয়ে কোপ দেন নান্টু সিকদার। পরে তার স্বামীর বড় ভাই মিন্টু সিকদার এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে আহত করেন। স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে বাড়ির পাশে একটি বাগানে দৌড়ে পালান মাহমুদা বেগম। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। সেখানে গিয়েও তাকে দা দিয়ে পরিকল্পিত ভাবে উপুর্যপুরি ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন স্বামী নান্টু সিকদার।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও নান্টু সিকদার কে আটক করেন এবং হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহতের শরীরে প্রায় ৩০/৪০টি কোপের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায় ৫/৬ বছর আগে পারিবারিক ভাবে তাদের বিবাহ হয়। বিবাহের পরে তাদের দাম্পত্য জীবন ভালোভাবেই চলছিল। বিয়ের কয়েক বছর পরে স্বামী নান্টু সিকদার ঠিকমতো কাজ না করায় সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়।
তারই ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহ আগে মাহমুদা বেগম তার বাবার বাড়িতে চলে যান। বাবার বাড়িতে যাওয়ার কয়েকদিন পরে স্বামী নান্টু সিকদার শশুর বাড়িতে বেড়াতে যান। দুদিন শশুর বাড়িতে থাকার পর স্ত্রীকে বাড়িতে আসার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু স্ত্রী বাড়িতে আসতে অস্বীকার করেন। তিনি তার স্বামীকে বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত কাজে যাওয়ার অনুরোধ করেন। শাশুড়ী তাকে মোবাইলে ফোনে বাড়িতে আসার অনুরোধ করলে বুধবার বিকালে মাহমুদা বেগম স্বামীর বাড়িতে আসেন। এরপর রাতে পরিকল্পিত ভাবে কুপিয়ে মাহমুদা বেগমকে হত্যা করে।
বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ মাহাবুবুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, পারিবারিক কলহের জের ও সন্তান না হওয়া এবং কাজকর্ম না করায় মানসিকভাবে অসহায় হয়ে পরার কারণে এ হত্যাকান্ড হতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করেছেন তিনি। এঘটনায় আসামীকে রাতেই আটক করা হয়েছে এবং হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে। অপরদিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে এবং হত্যাকারীকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.