প্রতিদিন বাড়ছে পদ্মার পানি, আতংকে পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। এতে নদীতীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি। কোথাও কোথাও আবার পুরনো বাঁধের বøক নিচে নেমে যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
রাজশাহী পাউবোর গেজ রিডার এনামুল হক জানান, নগরীর বড়কুঠি পয়েন্টে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন গড়ে ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। সবশেষ আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৭ দশমিক ৮০ মিটার। এর আগে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় ছিল ১৭ দশমিক ৭০ মিটার। আগের দিন মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ছিল ১৭ দশমিক ৬১ মিটার।
রাজশাহীতে পদ্মার পানির বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। পানি এখনও বিপদসীমার নিচে থাকলেও রাজশাহী নগরীর তালাইমারী শহিদ মিনার ও বাজে কাজলা এলাকায় নদীতীরে পানি উঠে গেছে। ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি স্কুলের মাঠে পানি উঠে গেছে। সেখানে তলিয়ে গেছে বেশকিছু ঘরবাড়ি।
ওই এলাকার বাসিন্দা কাজল খাতুন (৪৫) জানান, তাঁর বাড়িতে পানি টিন ছুঁই ছুঁই অবস্থা। বাড়িতে ঢোকার অবস্থা নেই। তিনি বাঁধের ওপর রান্না করছেন। কাজলের সঙ্গে কথা বলার সময় ছুঁটে আসেন আরও ১০-১৫ জন নারী। বাড়ি ডুবে গেছে বলে তাঁরাও তাঁদের নাম লিখে নিতে বলেন।
এলাকাটি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরমান আলী বিটিসি নিউজকে বলেন, তাঁর এলাকার প্রায় দুই হাজার বাড়িতে পানি ঢুকেছে। তিনি বাসিন্দাদের সহায়তার চেষ্টা করছেন।
নগরীর কেশবপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নৌকায় করে বালু ভর্তি বস্তা এলে বাঁধের পাশে ফেলা হচ্ছে। মনজুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বাড়ির সামনে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছিল। মনজুর বলেন, এই এলাকায় বাঁধ করা হয়েছে ২০০০ সালে। পদ্মায় পানি এসে ¯্রােতের ধাক্কা খাওয়ায় পুরনো এসব বাঁধ এখন নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। বাঁধের দেবে যাওয়া ঠেকাতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।
এদিকে রাজশাহী নগরীর ওপারে চর খিদিরপুর এলাকা এখনও ভাঙছে। এলাকার বাসিন্দারা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে নৌকায় করে এপারে আসছেন। রাজশাহীর বাঘা এবং গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মার ওপারের চর ভাঙছে। নতুন করে গোদাগাড়ীর নিমতলা এলাকায় পদ্মার এপার ভাঙছে। এই এলাকাটি আগে কখনও ভাঙেনি। এবার ভাঙন দেখে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। কয়েকদিন আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন।
পাউবোর রাজশাহীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রিফাত করিম বিটিসি নিউজকে বলেন, রাজশাহী নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। টি-গ্রোয়েন এবং আই বাঁধ ও কেশবপুর এলাকায় এই কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। তালাইমারী শহিদ মিনারের যে এলাকায় পানি ঢুকেছে সেখানে প্রতিরক্ষামূলক কিছু করার উপায় নেই। পদ্মার ওপারের চর খিদিরপুরেও কিছু করার নেই।
তবে বাঘার ভাঙন রোধে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিফাত করিম। তিনি আরও জানান, গোদাগাড়ীর নিমতলা এলাকাটি নতুন করে ভাঙতে শুরু করায় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প নেওয়া হবে। এখন জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ করে এলাকার ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.