পুঠিয়া উপজেলায়: আইনশৃংখলার চরম অবনতি সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পুঠিয়ায় গত দু’মাসে আইন শৃংখলার চরম অবনতি দেখা দিয়েছে। খুন, ছিনতাই, চুরি, জুয়ার আসর, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন কার্যকলাপে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ সকল ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্তদের চিহ্নিত বা গ্রেফতার করতে পারছেন। যার কারণে একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেই চলছে।
জানাগেছে, সর্বশেষ ২৬ মে দিবাগত রাতে পৌরসভা এলাকার আগ্নিদাহ গ্রামে দুটি গরু চুরি হয়েছে। এর আগে ভ্যান ছিনতাই করতে গত ২১ মে গাঁওপাড়া এলাকায় এক যাত্রীর সামনে কালু নামের এক চালককে হাত-পা বেধে জবাই করে হত্যা করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় পাবনা থেকে চাঁপাইনবাগঞ্জ যাওয়ার পথে পুঠিয়া ঝলমলিয়া এলাকায় আসার পর একজন ট্রাফিক সার্জন চিনতাইকারির কবলে পড়েন। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারিরা ওই কর্মকর্তার ওয়ালে্স ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া মাঝে মধ্যেই সড়ক ও মহাসড়কে ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় উপজেলাজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ছিনতাকারির হামলার শিকার আনারুল ইসলাম বলেন, আমরা ইন্টারনেট ও ডিসলাইনের কাজ করি। গত ১১ মে ভোররাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে মহাসড়কের ঝলমলিয়া ডাক বাংলার সামনে ছিনতাইকারিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। তারা রবিন ইসলাম (২১) নামে একজন ডিস লাইনকর্মী কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলাম। অথচ ছিনতাইকারির নাম পরিচয় দিতে না পারায় পুলিশ আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার একজন উপপরিদর্শক বলেন, সম্প্রতি সময়ে সড়ক ও মহাসড়কে একাধিক ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে। ওই চিনতাইকারি চক্রের হাতে একজন ভ্যানচালক খুন হয়েছেন। অপরদিকে প্রায় ৭ মাস আগে শিলমাড়িয়া এলাকা ডোবা থেকে হাত-পা বাধা অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার হয়। যা এখন পর্যন্ত ওই লাশের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করা যায়নি। এদিকে মাঝে মধ্যে মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে ছিনতাইকারির হামলায় আহত হয়েছেন অনেক পথচারিরা।
ছিনতাইকারির কবলে পড়ে একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট খুয়েছেন ওয়ারলেস। তবে বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তথ্যটি বাহিরে তেমন জানাজানি হয়নি। আর গত এক সপ্তাহেও ওয়ালে্সটি উদ্ধার হয়নি। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে চুরির, জুয়া খেলা, মাদক ব্যবসার ঘটনাতো রয়েছেই। আর এ সকল ঘটনায় থানা পুলিশ কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন।
মারুফ হোসেন নামের জিউপাড়া এলাকার বাসিন্ধা বলেন, গত দুইমাসে এই ইউনিয়ন এলাকায় মহাসড়কে খুন, জখমসহ একাধিক ছিনতায়ের ঘটনা ঘটেছে। আর এ কারণে সন্ধ্যা নেমে আসলেই ছিনতাইকারি আতঙ্কে স্থানীয় ব্যবসায়ি ও পথচারিরা বাড়ি ফিরে যায়।
পুঠিয়া উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির এক সদস্য বলেন, স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির মদদে উপজেলার মধ্যে সর্ববৃহৎ একটি মাদক সিন্ডিকেট রয়েছে। সেই সাথে সম্প্রতি গড়ে উঠেছে সড়কের যানবাহন ও পথচারিদের মালামাল ছিনতাই চক্র। আর অপরাধিরা কেও গ্রেফতার হলে আইনি জটিলতার বিষয়টি ওই জনপ্রতিনিধি সরাসরি তদারকি করেন। তিনি বলেন, ওই জনপ্রতিনিধি একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তির ডান হাত হিসাবে এলাকায় পরিচিত। যার কারণে পুলিশ-প্রশাসন তার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, এলাকায় আইনশৃংখলার কোনো অবনতি ঘটেনি। একটি মহল নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তবে এলাকায় কিছু অনাকাক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আর এ সকল বিষয়ে থানা পুলিশ সার্বক্ষনিক মাঠে কাজ করছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি মো.মাসুদ রানা রাব্বানী / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.