পাবনায় আ.লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত-১০

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে পাবনায় আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (০৯ মে) দুপুরে সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চরবাঙ্গাবাড়িয়ার মুজিব বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন- চরবাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের চাঁদ আলী সরদারের ছেলে হাবু সরদার (৫০), মৃত বাবর আলীর ছেলে ও আওয়ামী লীগের মহল্লা কমিটির সভাপতি ইসহাক প্রামানিক (৪৫),  রাজা মন্ডলের ছেলে মামুন হোসেন (৩০),  রাজা মন্ডলের আরেক ছেলে সেলিম মন্ডল (৪০), চর বাঙ্গাবাড়িয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী হামিদুল ইসলামের ছেলে হামিম হোসেন (১২), আক্কাস আলীর ছেলে সবরুল শেখ (৪০)। আহত বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। মাদরাসা শিক্ষার্থী ছাড়া সবাই আওয়ামী লীগের কর্মী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধায় হেমায়েতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭.৮.৯ নং ওয়ার্ডের বর্ধিত সভায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এসময় ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আনিছুর রহমান বক্তব্য দিতে শুরু করলে পলাশ নামের একজন বক্তব্য দিতে নিষেধ করলে সভায় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এসময় সদর উপজেলা আ. লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন উভয়পক্ষকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় পলাশ নামের ওই যুবক বিষয়টি দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ ঘটনা নিয়ে রাতেও গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এরপর মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুর ১২ টার দিকে চরবাঙ্গাবাড়িয়া মুজিববাঁধের দোকানে বসেছিল স্থানীয়রা। এ সময় কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে এসে অর্তর্কিত গুলি শুরু করে।  তখন দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হোন।  আহতদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গুলিবিদ্ধ হাবু সরদার বিটিসি নিউজকে বলেন, গতকাল রাতে আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের ঘটনায় রাত থেকে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। পুরো এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার  দুপুরের দিকে আমরা চায়ের দোকানে বসেছিলাম। সাবেক মেম্বর নজু মন্ডলের নেতৃত্বে পলাশ, দেলোয়ার, হাফিজ, রাসেল, সুরুজ ভোলন এসে অতর্কিত গুলি করে। শুধু তাই নয় আমাদের বাড়িঘরেও হামলা ও ভাঙচুর করেছে।
পাবনা পৌর ১৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাদ শেখ বিটিসি নিউজকে বলেন, হেমায়েতপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজু মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদ চলে আসছে। সম্প্রতি হাবুর ইটভাটা নজু মন্ডলরা দখল করাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করে।
আজ দুপুরের দিকে নজু মন্ডল ও তার ক্যাডারবাহিনী অতর্কিত গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ ৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
হেমায়েতপুর পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আইসি) আব্দুস সালাম বিটিসি নিউজকে বলেন, গতকাল সন্ধায় ৭.৮.৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভায় বক্তব্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় সানাউল্লাহ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.