আটোয়ারীতে অভিযানের এক সপ্তাহ পর আপন বীজ ভান্ডারের স্বত্বাধিকারীকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা


আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ভারতীয় ধান বীজ উদ্ধার করার সাত দিনেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই উপজেলা প্রশাসন। ভ্রাম্যমান আদালত, থানায় মামলা, সহ অনেক জল্পনা কল্পনা শেষে আট দিনের মাথায় এসে (৮ মে) সোমবার বিকেলে ভোক্তা অধিকারে জরিমানা করা হয়।
এমন ঘটনায় প্রশাসনের সাত দিন অতিবাহিত হওয়াকে নাটক বলে মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী। তাই কৃষকসহ হতাশায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন নিশ্চয়ই কোন অজানা রহস্যের কারনে এখনো ওইসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কৃষি প্রধান দেশে এমন অসাধু ও অর্থলোভী ব্যবসায়ীর জন্য কৃষি খাত আজ বিপর্যস্থ। কৃষকদের বাঁচাতে হলে ওই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের সমূলে নির্মূল করতে হবে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ শুধৃ জরিমানা নয়, তার লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। তাহলে অন্যান্য অসাধু ব্যবসায়ীরা সচেতন হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরজাহান খাতুন জানান, ঘটনার পর দিন ৩ মে মঙ্গলবার আমি ও জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা মহোদয় আটোয়ারী থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা দায়ের জন্য একটি এজাহার দাখিল করলেও ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলাটি অজ্ঞাত কারণে রেকর্ড করা হয়নি। তবে এটা জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তার মহোদয়ের কাজ, সে কারনে আমি আর এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না।
পঞ্চগড় জেলা বীজ ও প্রত্যয়ন এজেন্সী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, থানায় এজাহার দেওয়া হয়েছে। মামলাটি এন্ট্রি না করার কারন আমার জানা নেই। পুলিশের কাজ মামলা নেওয়া, আর বিচারের দায়ীত্ব আদালতের। মামলা এন্ট্রি না হওয়ায় এবং মাঝে তিন দিন ছুটি থাকার কারণে এ ব্যাপারে অভিযান করতে দেরি হয়।
৮ মে সোমবার পঞ্চগড় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনে অভিযোগ করলে আটোয়ারী উপজেলার ফকিরগঞ্জ বাজারের মেসার্স আপন বীজ ভান্ডারের সত্বাধিকারী মো: আনিসুর রহমান লেবুকে দেশী ধান বীজ ভারতীয় মোড়কে প্যাকেটজাত করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪৪ ধারা ভঙ্গের দায়ে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেন পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ। আটককৃত মালামালগুলি সার বীজ মনিটরিং কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোহেল রানা বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা বীজ আইনে যে মামলার এজাহার দায়ের করেছিলেন তা ছিল নন কগনিজেন্স (বিচারবিহীন) মামলা। ওই আইনে মুলত কোন মামলা হয়না। এ কারণে মামলা এন্ট্রি করা হয়নি। আমি এজাহারের কপিটা সংশোধনের কথা বলেছি। আজ পর্যন্ত উনারা সংশোধিত এজাহারের কপি আমাদের কাছে দেয়নি। তবে শুনেছি উনারা ভোক্তা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন। যার ফলে অভিযুক্তকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানও করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি।
পঞ্চগড় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ বিটিসি নিউজকে বলেন, দেশী ধানবীজ ভারতীয় প্যাকেটে প্যাকেটজাত করে কৃষকের সাথে প্রতারণার দায়ে আপন বীজ ভান্ডারের সত্বাধিকারী মো: আনিসুর রহমান লেবুকে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আর জব্দ করা ধানবীজ গুলোর বিষয়ে সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুসফিকুল আলম হালিম বিটিসি নিউজকে বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার সহ জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তার কাছে জব্দকৃত ভারতীয় ধানের বীজগুলোর বিষয়ে অভিহিত করা হয়েছে। জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষনে অভিযোগ করার কারনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন কর্মকর্তা দেড় লক্ষ টাকা জরিমান করেছেন বলে আমি শুনেছি।
এসময় উপজেলা কৃষি বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো: ফরহাদ হোসেন ও মানস কুমার রায়, রাধানগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু জাহেদ, বনিক সমিতির সম্পাদক মো: জামিলুর রেজা মানিক , থানা পুলিশের একটি দল সহ স্থানীয় অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি মোঃ লিহাজ উদ্দীন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.