পলাশবাড়ীতে সাথী ফসল হিসেবে একই জমিতে পিয়াজ-বেগুন চাষে লাভবান কৃষক

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীতে সাথী ফসল হিসেবে একই জমিতে পিয়াজ ও বেগুন চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সফল কৃষক মগগুল হোসেন। অল্প জমিতে অধিক ফসল চাষের লক্ষ্যে ব্যতিক্রমধর্মী  চিন্তা থেকে এমন উদ্যোগ নেন বলে তিনি  জানান।
তিনি পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের পূর্ব গোপালপুর গ্রামের মৃত নয়া মিয়ার ছেলে একজন সফল পিঁয়াজ চাষী। অল্প জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে অধিক ফসল বাজারে বিক্রয় করে আর্থিকভাবে  স্বাবলম্বী হতে চান। সফল পিঁয়াজ চাষী মগগুল জানান,গত রবি মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে এমন ফসল উৎপাদন করে সফলতার সন্ধান পেয়েছিলেন তিনি।
তারই ধারাবাহিকতায় চলতি রবি মৌসুমে পূর্ব গোপালপুর গ্রামের মাঠে ৭০ শতক জমিতে পিয়াজ ও বেগুন চাষ করেন। একই জমিতে দু’টি ফসল চাষ করায় উৎপাদন খরচ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। পিয়াজের পৌনে ২ হাত জায়গার দুই ধারে শুলিতে রোপণ করেছেন বেগুনের চারা।
পিয়াজ ও বেগুন উভয় চারাগুলো দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী চৈত্র  মাসে পিয়াজ তোলার উপযোগী হবে এবং বেগুনের চারাগুলো বড় হয়ে বেগুন ধরতে শুরু করবে। পিয়াজ উঠানোর পরে শুলিতে রোপণকৃত বেগুনের চারাগাছগুলোর গোড়া মাটি দিয়ে বাঁধাই করে সেচ দিলেই বেগুন গাছে ফুল আসতে শুরু করবে।
চলতি মৌসুমের কিছুদিন আগে থেকে  হঠাৎ পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পাওয়াই পিয়াজ চাষে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তিনি। ৭০ শতক জমিতে তিনি খরচ বাদে ২ লাখ টাকার পিয়াজ ও ১ লাখ টাকার বেগুন বিক্রির আশা ব্যক্ত করেন। পিয়াজ ও বেগুনের দাম ভালো থাকায় লাভবান  হওয়ার স্বপ্ন পিয়াজ চাষী মগগুল হোসেনের।
তিনি মনে করেন দেশের প্রতিটি কৃষক যদি তাদের ফসলি জমির মধ্যে কিছু জমিতে পিয়াজ চাষ করেন, তাহলে দেশের  চাহিদা  মিটিয়ে  বিদেশে পিয়াজ রপ্তানি করা সম্ভব। একই জমিতে পিয়াজ ও বেগুন উৎপাদন ছাড়াও বাকি লাউ, করলা, খিরা, মিষ্টি আলু, গম, আলু চাষ করেছেন তিনি।
তার দেখাদেখি তারই বড় ভাই হাবিজার পিয়াজ চাষ করেছেন ৬০ শতক আর অপর এক ভাই নজির হোসেন ৭০ জমিতে পিয়াজ চাষ করেছেন। তাদের পিয়াজেরও বাম্পার ফলন হয়েছে।
এব‍্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার (ভার:) সাইফুন্নাহার সাথী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, চলতি মৌসুমে ২৮০ হেক্টর জমিতে পিয়াজের লক্ষ্যমাত্রা থাকলে ২১০ হেক্টর  জমিতে পিয়াজ চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের  পরার্মশ অব‍্যাহত রয়েছে এবং ৭৫ জন পিয়াজ চাষীকে গ্রীষ্মকালীন প্রনোদনা বাবদ প্রতি কৃষকদের ২৮ শ করে টাকা, এক কেজি পিয়াজ বীজ, ১০ কেজি এমওপি সার ১০ কেজি ডিএমপি সার,এক কেজি বালাই নাশক,এক কেজি নেট ও পলিথিন দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, উপজেলার কৃষক সাথী ফসল হিসেবে একই জমিতে অল্প খরচে দু’টি ফসল পিয়াজ ও বেগুন  চাষ অত্যন্ত লাভজনক।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, পিয়াজ, রসুন, আদাসহ সকল মসলা জাতীয় ফসল চাষের জন্য কৃষকদের প্রণোদনাসহ অল্প সুদে কৃষি লোন প্রদান করতে উপজেলার  সকল ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ  দিয়েছি। এসব লোন পেলে উপজেলার কৃষকেরা আরো ভালো ফসল উৎপাদন করতে পারবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.