পঞ্চগড়ের সংঘর্ষে প্রকৌশলী একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে দিনমজুর বাবা বাকরুদ্ধ

নাটোর প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ে মুসল্লীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে নাটোরের বড়াইগ্রামের প্রকৌশলী জাহিদ হাসান (২৬) নিহত হয়েছেন। দুই মেয়ের পর জন্ম নেওয়া একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে বাকরুদ্ধ দরিদ্র পিতা আবু বক্কর সিদ্দিক। দিনে দিনমজুরী ও রাতে স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নৈশ প্রহরীর চাকরি করে এক মাত্র ছেলেকে বিএসসি প্রকৌশলী পাস করিয়ে ছিলেন বাবা।
৬ মাস ধরে ছেলে জাহিদ ঢাকাস্থ বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল নামকএকটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছিল। বেতন ভাতাও ছিল ভালো। অনেক দেনা করে লেখাপড়া শিখিয়ে এখন সেই দেনা পরিশোধের সময় এসে ছিলো।
কিন্তুপঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বার্ষিক জলসায় গিয়ে মুসল্লী ও পুলিশের সংঘর্ষে ইটের আঘাতে ঘটনা স্থলেই মারা যায় জাহিদ। ওই জলসায় তার পিতা আবু বক্কর সহ অন্যান্য চাচারা ও অংশ নিতে উপস্থিত ছিলো।
জানা যায় , শনিবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় একমাত্র সন্তানের মৃতদেহ নিয়ে নাটোরের বড়াইগ্রামের জোয়াড়ি কাছুটিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন জাহিদের বাবা ও চাচারা। ছেলেজা হিদ হাসান গত শুক্রবার সকাল ১০টায় পঞ্চগড়ে পৌঁছায়।
আহমদিয়া অনুসারী হিসেবে পঞ্চগড় জেলার আহমেদ নগরে অনুষ্ঠিত তিন দিনের আহমদিয়া মুসলিম জামাতের বার্ষিক জলসায় অংশ নিতে বাবা চাচার সাথে জাহিদ ও সেখানে যায়। এ জলসা শুরু হয় বৃহম্পতিবার রাতে। সেখানে আহমদিয়া বিরোধীরা এ জলসা বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড় শহরে শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ করে ও দুপুরে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে চলা
এ সংঘর্ষে আরিফুর রহমান (২৮) ও জাহিদ হাসান (২৬) নামের দুই যুবক নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশের ৯ সদস্য ও ২ সাংবাদিকসহ অন্ততপক্ষে ৫০জন আহত হয়।
সংঘর্ষে জাহিদ হাসান মাথায় ও মুখে ইটের আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ঘটনা স্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বলে জানায় বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক।
বড়াইগ্রামের জোয়াড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর জানান, অনেককষ্টে একমাত্র ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছে আবু বক্কর। লেখাপড়া শেখাতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সুদে ৪ লক্ষ টাকা দেনা করে। জাহিদও ভালো চাকরী পেয়ে ছিলো। ভেবে ছিলো বছর দুয়েকের মধ্যে দেনা শোধ হলে ছেলেকে বিয়ে দিবে। কিন্তু সে ম্বপ্ন তার নিমিষেই ধূলোয় মিশে গেলো।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.