নির্বাচনে জিতেও সরকার গঠনে সিনেটের দিকে তাকিয়ে এমএফপি-ফেউ থাই

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: থাইল্যান্ডে বিরোধী জোটের ঐতিহাসিক জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী হতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন গণতন্ত্রপন্থি মুভ ফরওয়ার্ড পার্টির তরুণ নেতা পিটা। সমর্থন চেয়েছেন জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল ফেউ থাই পার্টিসহ অন্যান্য শরিকদের কাছে। তবে সরকার গঠন নিয়ে এখনও রয়েছে নানা অনিশ্চয়তা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এর আগেও সেনা অভ্যুত্থান কিংবা আদালতের রায়ে নির্বাচনের ফল ছুঁড়ে ফেলার ইতিহাস রয়েছে দেশটিতে। তাই বিরোধীরা যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার গঠন করতে না পারছেন ততক্ষণ পর্যন্ত শঙ্কা দূর হচ্ছে না।
১৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পার্লামেন্টে ১৫১টি আসন নিশ্চিত করে শীর্ষ স্থান দখল করে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি। যার নেতৃত্বে গণতন্ত্রপন্থি ৪২ বছর বয়সী পিটা লিমজারোয়েনরাত। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রার ফেউ থাই পার্টি। দলটি মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই।
প্রায় এক দশক ধরে থাইল্যান্ডের ক্ষমতায় সেনা সমর্থিত সরকার। তবে এবারের নির্বাচনে তাদের প্রত্যাখ্যান করে তরুণদের দেশ পরিচালনার সুযোগ করে দিয়েছেন থাইবাসী। দেশটির জাতীয় নির্বাচনে বিস্ময়কর সাফল্য পেয়েছে মুভ ফরওয়ার্ড পার্টি (এমএফপি)। পার্লামেন্টে নিম্নকক্ষের ৫০০ আসনের ভেতর ১৫১টি নিশ্চিত করেছে দলটি। আর মাত্র দশটি আসন কম পেয়ে ১৪১টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ফেউ থাই পার্টির পায়েটংটার্ন সিনাওয়াত্রা।
জোট সরকার গড়তে এরই মধ্যে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে এই দুই বিরোধী দল। পাশাপাশি আরও চারটি দলকে জোটে ভেড়াতে চলছে আলোচনা। সরকার গঠনের পর থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের সমালোচনাকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর আইন রয়েছে তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পিটা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটির সেনা সমর্থিত সরকারের ব্যাপক দমন-পীড়েনর কারণেই গণতন্ত্রপন্থীদের এই উত্থান।তবে সরকার গঠন করতে মেলাতে হবে নানা হিসেব-নিকেশ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় যেতে হলে প্রয়োজন মোট ৩৭৬টি। কিন্তু ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা এমএফপি ও ফেউ থাই পার্টি পেয়েছে মোট ২৯২টি। বাকি চারটি বিরোধী দলের সমর্থন পেলে সেই সংখ্যা দাঁড়াবে ৩০৬টি। আর তাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করতে এখনো উচ্চকক্ষের দিকে তাকিয়ে বিরোধী জোট।
উচ্চকক্ষ সিনেটের সমর্থন পেলেই কেবল সুযোগ মিলবে সরকার গঠনের।এর আগে, ২০১৯ সালে নির্বাচন হয় থাইল্যান্ডে। তবে ওই নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি কোন দল। কয়েক সপ্তাহ পর সেনা-সমর্থিত একটি দল সরকার গঠন করে এবং প্রায়ুথ থান ওচাকে তাদের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে।
এ প্রক্রিয়াতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলো বিরোধী জোট। তাই এ অবস্থায় সেনা অভ্যুত্থান কিংবা আদালতের রায়ে নির্বাচনের ফল ছুঁড়ে ফেলার ইতিহাস দেশটিতে রয়েছে আবারও সেটির পুনরাবৃত্তি হয় কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত আন্তর্জাতিক অঙ্গন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.