নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার দাবী করলেন অভিযুক্ত শিক্ষক

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি বিতান খানমের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর শারিরীক নিগ্রহ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেন একই বিভাগের এক প্রভাষক।
সোনিয়া আজাদ নামের ওই প্রভাষক অভিযোগ পত্রে জানান, গত ২৯ নভেম্বর লোকপ্রশাসন বিভাগের একটি সভায় মতবিরোধের জেরে বিতান খানম তার দিকে সিল প্যাড, পেপার ওয়েট ও স্টাপ্লার মেশিন ছুড়ে মারেন। আর এর আগে বিতান খানম তাকে ‘কল্লা’ কেটে ফেলার হুমকি দেন।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ৩ জানুয়ারী বিটিসি নিউজ.কম.বিডি তে বশেমুরবিপ্রবিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রভাষকের গলা কেটে ফেলার হুমকির অভিযোগ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। আর এই সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিযুক্ত বিতান খানম। বিতান খানম দাবি করেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার।
বিটিসি নিউজ পাঠকদের জন্য বিতান খানমের বক্তব্যটি হুবহু তুলে দেয়া হলো:
আমি বিতান খানম, সহকারী অধ্যাপক ও সভাপতি হিসেবে লােকপ্রশাসন বিভাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছি। গত ০৩/০১/২০২১ কাজ রবিবার আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গনমাধ্যমে এডিট করা রেকর্ডের উপর ভিত্তি করে সংবাদ প্রকশিত হয়। যেখানে বলা হয় আমি আমার সহকর্মী টি.এন, সােনিয়া আজাদ কে শারীরিক নিগ্রহ এবং হুমকি প্রদান করি। আমি মনে করি একটি মহল আমার বিরুদ্ধে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এই সকল যড়যন্ত্র পরিকল্পনা করে এবং নানা সময় না জানিয়ে ব্যক্তিগত  কথোপকথন রেকর্ড করে ও তা পরবর্তীতে এডিট করে প্রকাশ করে। আমি উদ্দেশ্য প্রণােদিত যড়যন্ত্রের স্বীকার।
প্লানিং কমিটির সভায় এ দিন উপস্থিত সদস্য সংখ্যা ছিল ০৩ (তিন) জন। আমি বিতান খানম, জনাব টি.এন. সােনিয়া আজাদ, প্রভাষক, লােকপ্রশাসন বিভাগ, জনাব মােঃ নাসির উদ্দিন, প্রভাষক, লােকপ্রশাসন বিভাগ। এখানে সকল সদস্যকে আপগ্রেডেশনের সকল তথ্য উপাত্ত পর্যবেক্ষন করে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। আমাদের সাথে জনাব টি.এন সােনিয়া আজাদ সহমত পােষন করেন। জনাব ইমা সুলতানা চারু এর অভিজ্ঞতা ও যােগ্যতা গণনা ঠিক আছে বলে মত দেন ও স্বাক্ষর করবেন বলে মত পােষন করেন। কিন্তু তিনি স্বাক্ষর এর সময় নােট অব ডিসেন্ট সহ স্বাক্ষর করেন। তখন আমি ও জনাব মােঃ নাসির উদ্দিন, জনাব টি,এন, সােনিয়া আজাদ এর কাছে জানতে চাই কেন সহমত পােষন করার পর নােট অব ডিসেন্ট সহ স্বাক্ষর করলেন। জনাব টি,এন, সােনিনা আজাদ এর যদি আপত্তি থাকে তবে তা মিটিং এ উপস্থাপন করলে আলােচনা সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তখন তিনি একপর্যায়ে মিটিং ছেড়ে চলে যেতে চাইলে আমি জনাব টি, এন, সােনিয়া আজাদকে মিটিং শেষ করে যেতে বলি। কারন এর আগে অনেকবার মিটিং শেষ না করে তিনি চলে গেছেন। কিন্তু তিনি আমাকে বলেন যদি মিটিং শেষ করে না যাই তাে আপনি আমাকে মারবেন নাকি? আমি বলি কেন আপনাকে মারবাে? আমি মনে করি প্লানিং কমিটির সভার কার্যক্রম শেষ করা জনাব টি.এন, সােনিয়া আজাদ এর দায়িত্ব ছিল।
এখানে শারীরিক ভাবে নির্যাতনের কোনাে অবস্থা সৃষ্টি হয়নি। তাহলে কেন তিনি আমাকে জিজ্ঞেসা করলেন মারার কথা? তারপর আমি আমার প্রজেক্টের রিপাের্ট পিন-আপ করার জন্য স্ট্যাপলার হাতে নেই কিন্তু সে তখন বলে স্ট্যাপলার হাতে নিয়েছেন কি আমাকে মারার জন্য তখন আমি বলি আমি যাই হাতে নিই তাতে-ই আপনার কেন মনে হচ্ছে আমি আপনাকে মারবাে? আমি এটা টেবিল ও রাখতে পারি, এটা দিয়ে পিনাপ ও করতে পারি বা এটা ফেলে দিতে পারি, এই বলে আমি পাশে ফেলে দেই। তখন সােনিয়া ম্যাডাম চিৎকার করে বলে “বিতান ম্যাডাম আমাকে মারছেন। এ কথা বলার কারন সে ঐ সময় উদ্দেশপ্রণােদিতভাবে রেকর্ড করছিলেন। তখন নাসির স্যার বলেন “আপনাকে মারছে মানে কি? যা ধরিতেছে তাতেই আপনি মনে করতেছেন আপনাকে মারার জন্য?
এছাড়া সােনিয়া ম্যাডাম শিক্ষক সমিতির কাছে মিথ্যা অভিযােগ করার পর থেকে আমি তার সাথে কথাই বলিনা একাডেমিক উদ্দেশ্য ছাড়া, তাহলে আমি তাকে মানসিক নির্যাতন কিভাবে করলাম সােনিয়া ম্যাডাম আমার নামে মিথ্যা অভিযােগ করার পর আমি তাকে জিজ্ঞেসা করি কেন মিথ্যা অভিযােগ করছে। সেটা জানতে চাইলে তখন তিনি বলেন “আমি মিথ্যা অভিযোগ করছি তাে আপনি আমার কি করবেন? এখন প্রশাসন আমার সাথে আমি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি।” তখন আমি বলি আমি আপনার কিছুই করতে পারবােনা আর পারলে তাে এতাে দিনে করতাম-ই কিন্তু আমি যদি এই পজিশনে না থাকতাম আর আপনি যদি আমার সহকর্মী না হতেন আর কাওকে এতাে উপকার করার পর যদি সে আমার নামে মিথ্যা অভিযােগ করতাে তাহলে আমি হয়তাে তার কল্লাই কাটতাম “।
প্রসঙ্গত, সােনিয়া ম্যাডাম আমাকে চলতি দায়িত্ব ভাইস চ্যান্সেলর আসার পর থেকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করে আসছে। সে প্রতিটা অফিসিয়াল দিনে কল রেকর্ড করা শুরু করে। নিয়ম ববহির্ভূতভাবে প্ল্যানিং কমিটির মিটিং এর গােপন রেকর্ড করেন। এটি নিয়ে ও অভিযােগ দেয়া হয়েছে কিন্তু প্রশাসনের কাছের লােক হওয়ার তার বিরুদ্ধে কোনাে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
আমার নামে মিথ্যা অভিযােগ করার পর আমি রেজিষ্ট্রার স্যারের কাছে ২ টা লিখিত দেই কিন্তু তার কোন সুরাহা তিনি করেন নি। আমার নামে মিথ্যা অভিযােগ করার পর আমাকে কারণ দর্শানাে নােটিশ দেওয়া হলেও সােনিয়া ম্যাডাম কে কোন কারণ দর্শানাের নােটিশ দেওয়া হয়নি। এটা প্রশাসনের দ্বিমুখী আচাৱণ। আমি রেজিস্ট্রার স্যার কে জিজ্ঞেসা করলে তার কোন সদুত্তর পাইনি।
রেজিস্ট্রার স্যার বিভাগের সকল সহকর্মীর কাছ থেকে সকল ঘটনা জানার পর সুরাহা করতে চাইলে সে বুঝতে পেরেছিল যে সে মিথ্যা অভিযােগ করছে। সুতরাং সে সকল সহকর্মীর সামনে মিথ্যা অভিযােগ করার জন্য হয়তাে প্রমানিত হলেন তাই রেজিস্ট্রার স্যার মিমাংসার তারিখ দেওয়া পর ও সে আসে নি।। তাৱপৱ রেজিস্ট্রার স্যার তাকে একাধিক বার ফোন করলেও সে ফোন রিসিভ করে নি। তারপর রেজিস্ট্রার  স্যার আমার সহকর্মী হাশেম রেজাকে তার বাসায় পাঠায়। তখন আমার সহকর্মী যেয়ে দেখে সে তার বাচ্চাদের খাওয়াচ্ছেন। রেজিস্ট্রার স্যার ফোন করার প্রায় ৩০ মিনিট পর সে ফোন করে বলে সে অসুন্থ।
তিনি আমার বিরুদ্ধে এ সকল যড়যন্ত্র করছে কারণ, আমার পরবর্তী সভাপতি হিসেবে তার আসার কথা থাকলেও উক্ত পদের জন্য তার থেকে অপর সহকর্মী জনাব ইমা সুলতানা চারু এগিয়ে থাকেন যা তিনি কোনাে ভাবে মেনে নিতে পারছেন না। সােনিয়া ম্যাডাম আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ইমা সুলতানা চারু ম্যাডামের অভিজ্ঞতা গননা করতে নিষেধ করেন আর যদি না করি তাহলে সে আমাকে সামাজিক ভাবে হেনস্তা করার হুমকি দেন যে সে এই সংবাদপত্রে প্রকাশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছেন।
এছাড়া জনাব টি.এন সােনিয়া আজাদ অবৈধ ভাবে শিক্ষক হিসেবে ডিপার্টমেন্ট এ নিয়ােগ পান যা আমি জেনে যাই তাই আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ এনে চাপে রাখতে চান। যাতে করে আমি তার এই তথ্য প্রকাশ না করি। যেহেতু তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়নি তাই সে পরিকল্পনা করে আমার নামে মিথ্যা তথ্য সাংবাদিকদের কাছে সরবারহ করেন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: সংবাদটিতে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী উভয়ের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে প্রতিবেদক তার নিজস্ব কোনো বক্তব্য বা মতামত তুলে ধরেন নি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বশেমুরবিপ্রবি (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি নওরীন বর্না। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.