নাটোরে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্তির অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি:  নাটোরের গুরুদাসপুরে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণের সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে মুুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্তির অভিযোগ উঠেছে।

তালিকাভূক্ত হওয়া ব্যক্তি মারা যাবার ১১ বছর পর তার ছেলেরা মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলীর সনদে হযরতের স্থানে মোবারক প্রতিস্থাপন করে এ অপকর্ম করেছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধার আপন ভাই বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও নাটোর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মৃত আসমতুল্লার ছেলে মোবারক আলী কখনও মুুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, এমনকি কখনও ভারতের সাহেব রামপুর জলঙ্গী ক্যাম্পে প্রশিক্ষণেও অংশ নেননি।

চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেয়া মৃত্যু সনদ অনুযায়ী তিনি ২০০২ সালের ১৪ এপ্রিল মারা যান। কিন্তু মৃত্যুর তারিখ ১৯৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল দেখিয়ে ২০১৩ সালে তার সন্তানেরা তদ্বির করে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকাভূক্ত করেন, যার গেজেট নং ১৩৪৭, তারিখ-০৭/০১/২০১৩ ইং।

মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে নাম তালিকাভূক্তির আবেদনে মোবারক আলী সাহেবরামপুর জলঙ্গী ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মর্মে বাংলাদেশ সরকারের মুজিবনগর যুবশিবির নিয়ন্ত্রণ পরিষদ থেকে দেয়া যে সনদের কপি জমা দিয়েছেন সেটি জাল বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগে জানা যায়, মোবারক হোসেনের খালাতো ভাই একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হযরত আলীর প্রশিক্ষণ গ্রহণের সনদের ফটোকপি ট্যাম্পারিং করে হযরত শব্দের স্থানে মোবারক এবং হযরতের পিতার নাম ইউসুফের জায়গায় আসমত বসিয়ে জাল সনদ তৈরী করা হয়েছে।

এ কারণে মোবারকের পিতার নাম সকল জায়গায় আসমতুল্লা লেখা হলেও ট্যাম্পারিং করা সনদে আসমত আলী লেখা রয়েছে।

এভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে একজন মৃত ব্যাক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আতœসাৎ করায় বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নওপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান (৬৮) জানান, নওপাড়া গ্রাম থেকে আমিসহ তিনজন সাহেব রামপুর ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছি।

আমার প্রতিবেশী মোবারক কখনও সেখানে যায়নি, বা মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেয়নি। তিনি মারা যাবার বেশ কয়েক বছর পর শুনছি তিনি নাকি মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, কিন্তু কিভাবে হলেন সেটা আমার বুঝে আসছে না।

মোবারক হোসেনের ছেলে ওয়াকিল আহমেদ বিটিসি নিউজকে জানান, তার পিতা নিয়মানুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হয়েছেন। তবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণের মূল সনদ দেখতে চাইলে তিনি তার কাছে ফটোকপি আছে বলে জানালেও মূল কপি দেখাতে পারেননি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, আমি এখানে অল্প দিন আগে এসেছি। যে কারণে বিষয়টি আমার জানা নেই।

তারপরও আমি খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.