নাটোরের প্রাচীনতম অচিন বৃক্ষ

বিশেষ (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের চলনবিলের দুর্গম দুলশী গ্রামে বিরল একটি প্রাচীন গাছ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাছটির সঠিক জাত বা বয়স জানেন না কেউ-ই। প্রবীণরা বলছেন, প্রায় দুই থেকে তিনশ’ বছর বয়স হতে পারে গাছটির।

সম্প্রতি গবেষক, বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ পর্যটকদের আগমনে, স্থানীয়রা কৌত‚হলী হয়ে উঠেছেন অচিন বৃক্ষটি নিয়ে।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার ১ নম্বর সুকাশ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম দুলশী। প্রবেশমুখেই ভ‚মি থেকে প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে প্রাচীন এই অচিন বৃক্ষ। উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট।
আর চওড়া প্রায় ১৫০ বর্গ ফুট। গোড়া থেকে প্রাকৃতিক কারুকাজের শেকড় জড়িয়ে রয়েছে গাছটিতে। প্রায় ১৫ শতক জমি নিয়ে এই বৃক্ষটি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
জৈষ্ঠ্য মাসে গাছটিতে ফল ধরে। দেখতে আক্সগুর ফলের মত এবং পাকলে অত্যন্ত সুস্বাদু, স্বাদ অনেকটা খিরের মতো। স্থানীয়রা তাই গাছটির নাম দিয়েছেন খিরির গাছ।
নাটোর জেলা সদর থেকে প্রায় ৫১ কিলোমিটার দূরে বগুড়া জেলার সীমান্ত নন্দিগ্রাম উপজেলার রনবাঘা হাট পেরিয়ে যেতে হয় দুর্গম এই দুলশী গ্রামে। সম্প্রতি গাছটি দেখতে আসছেন অনেক দর্শনার্থী।
বন বিভাগ জানে না গাছটি সঠিক কোন গোত্রের বা জাতের। তবে নরওয়ে প্রবাসী বৃক্ষ গবেষক ভয়লেট হালদার সফেদা জাতের বলে মন্তব্য করেছেন।
স্থানীয় বৃদ্ধরাও এই গাছের বয়স সম্পর্কে বলতে পারেননি, এমন কি উনার দাদারাও বলতে পারেননি। সত্তোরর্ধ বয়সী মোকছেদ আলী জানান, এই গাছ তিনি শিশু কালে যে অবস্থায় দেখেছেন, এখনও তাই দেখছেন। গাছটি ঠিক কত বছর আগে জন্ম হয়েছে তার দাদাও তাকে বলতে পারেনি।
নরওয়ে প্রবাসী বৃক্ষ গবেষক ভয়লেট হালদার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, এই জাতীয় গাছ বাংলাদেশে ৪/৫ টি আছে তার মধ্যে প্রথম যেই বৃক্ষটার সন্ধান উনারা পান, সেটা নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। বিরল প্রাচীন এই গাছের বংশ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, জানিয়েছে বন বিভাগ।
নাটোর বনবিভাগের ফরেস্টার সত্যেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, অচিন এই প্রাচিন বৃক্ষটি স¤পর্কে কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। আমরা এই গাছটিকে অচিন গাছ হিসেবেই জানি। তবে এই গাছটির পাতা এবং ডাল সহ বিস্তারিত তথ্য আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে গবেষণার আবেদন জানিয়ে। এই প্রজাতীর বংশবিস্তারের চেষ্টা করবেন তারা ।
গাছটি সংরক্ষণ ও এলাকাটিকে পর্যটন কেন্দ্র করার কথা ভাবছে জেলা প্রশাসন।
নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এই বৃক্ষটি দেখার জন্য বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ , এখানে আসতে পারবেন, এতে পর্যটনেরও বিকাশ ঘটবে।
অচিন এই গাছটির নিচে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে স্থাপন করা হয়েছে বৃক্ষ মানিক নামফলক।
নাম ফলকটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এলাকাটিকে পর্যটক আকৃষ্ট করতে সুন্দর করে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ (নাটোর) প্রতিনিধি মো. নাসিম উদ্দিন নাসিম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.