ধর্ষিতার ইজ্জতের মূল্য দুই লাখ টাকা !!!

বিশেষ প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বিনাউটি ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে এক মুক্তিযোদ্ধার নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের বিচার সালিশের মাধ্যমে শেষ করার অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামে এই ধর্ষণ কান্ডের বিচার সম্পন্ন হয়। সালিশে ধর্ষকদের ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
বিচারে ধর্ষিতার ইজ্জতের মূল্য হিসেবে ১ লাখ টাকা এবং থানা থেকে মামলা উঠানোর খরচ বাবদ ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় ধর্ষকদের। এতে এলাকায় সচেতন মহলের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, গত ৩ জুন সকালে সৈয়দাবাদ গ্রামের বাজারে একটি ভবনের ভিতর ধর্ষণের শিকার হয় একই গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার সহজ সরল নাবালিকা কন্যা। স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের আটকের চেষ্টা করলে ধর্ষক ওই গ্রামের মৃত আবদুল হামিদ মিয়ার ছেলে ৪ সন্তানের জনক রাজমিস্ত্রি ইউছুফ মিয়া ও একই গ্রামের হেলু মিয়ার ছেলে ২ সন্তানের জনক রাজমিস্ত্রি সফিউল্লাহ মিয়া পলিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ওই দিনই ধর্ষিতার পিতা মুক্তিযোদ্ধা বাদী হয়ে ওই ২ জনকে আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ এসে সরেজমিনে তদন্ত করেন। তখন থেকেই একটি মহল এটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে আসছিলো বলে জানা যায়। পরে গত শনিবার ২০ জুন সালিশ বসে সৈয়দাবাদ বাসষ্ট্যান্ডে বিল্লাল মেম্বারের বাড়িতে। সালিশে দুই ধর্ষককে ধর্ষিতার ইজ্জতের মূল্য বাবদ ১ লাখ টাকা এবং থানায় মামলা উঠানোর জন্য ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
বিনাউটি ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল হোসেন, বিনাউটি আওয়ামী লীগ সভাপতি মো.কামাল হোসেন, ২ নং ওয়ার্ড সদস্য বিল্লাল হোসেন ভুইয়া এই সালিশে নেতৃত্ব দেন।
এ সময় গ্রামের অন্যান্য  সাহেব সর্দারগন উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান জরিমানা এবং মামলা উঠানোর টাকা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেয়ার জন্য ধর্ষকদের পরিবারকে নির্দেশ দেন সাহেব সর্দারগন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রওনক ফারজানা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, কোনো ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে বিচার বা জরিমানা করার কোন নিয়ম নেই। আইনী প্রক্রিয়াই এর সমাধান হবে। এ সমস্ত বিষয় স্থানীয়ভাবে বিচার বা জরিমানা করার চেষ্টা করা বেআইনী কাজ।
এ বিষয়ে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধার নাবালিকা মেয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। তবে জরিমানা করে সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণ ঘটনার নিস্পত্তি করা হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আসামীরা পলাতক বিধায় তাদেরকে ধরা যাচ্ছেনা। ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ লোকমান হোসেন পলা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.