দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত জয়ের ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ। দলের এখন একটাই লক্ষ্য, তা হচ্ছে এক ম্যাচ হাতে রেখেই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায়। প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে এবারের সফরে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে টাইগাররা। বুধবার গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় তারা।
বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার হবে টি-স্পোর্টস চ্যানেলে।
সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুই ম্যাচের টেস্টে হোয়াইটওয়াশের পর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হারেছে বাংলাদেশ (বৃষ্টির কারণে প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়)। হারের বৃত্তে থেকে বেড়িয়ে জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করে তারা। এই ফরম্যাট শুরু করেই জয়ের দেখা পায় বর্তমানে ওয়ানডে ফরম্যাটে বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি বাংলাদেশ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়টি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের টানা নবম ওয়ানডে জয়। এর চেয়ে শুধুমাত্র জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ টানা ১৪ ওয়ানডে ম্যাচে জয়ের রেকর্ড রয়েছে  বাংলাদেশ দলের।
দ্বিতীয় ম্যাচ জিততে পারলে সিরিজের জয় নিশ্চিতের পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টাইগারদের টানা ম্যাচ জয়ের সংখ্যাটা দুই অংকে অর্থাৎ ১০-এ পৌঁছে যাবে।
২০১৮ সাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে কোন ওয়ানডে হারেনি বাংলাদেশ। এসময় টানা আটটি ওয়ানডে জিতেছে টাইগাররা। ঐ বছর যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। এরপর ২০১৯ ও ২০২১ সালে দু’টি সিরিজ যথাক্রমে, ২-১ ও ৩-০ ব্যবধানে জিতে টাইগাররা। এসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যু, বহুজাতিক টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপ ও ত্রিদেশীয় সিরিজেও জয় পায় বাংলাদেশ।

এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪২টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। জিতেছে ১৯টিতে, হেরেছে ২১টিতে। ২টি পরিত্যক্ত হয়। দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়-হারের ব্যবধান কমানোর জন্য এই সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য ভালো সুযোগ।

ওয়ানডেতে এ পর্যন্ত ৩৯৫টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে জয় ১৪১টি, হার ২৪৭টি এবং ৭টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। কিন্তু  দেরিতে হলেও, বাংলাদেশের জয়ের অনুপাত হারের চেয়ে বেশি। বিশেষভাবে ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এ পর্যন্ত  বাংলাদেশ ১৫টি ওয়ানডে সিরিজে জয় পায়। হার ছিলো মাত্র ৪টি সিরিজে। যা এই ফরম্যাটে তাদের শক্তির বড় প্রমান। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা চতুর্থ সিরিজ জয় এবং ২০১৫ সাল থেকে ২০টির মধ্যে ১৬তম জয়ের সুযোগ টাইগারদের।
ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের মতে, ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এগিয়ে থাকলেও  হাল ছাড়তে রাজি নয় তার দল। বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডেতে বেশ কয়েকটি ক্যাচ ফেলেছেন এবং যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তবে দল বড় সমস্যা পড়তে পারে।
তামিম বলেন, “হ্যাঁ, আমরা ম্যাচ জিতেছি কিন্তু আমদের উন্নতির জায়গা আছে। আমরা যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে আরও বড় দলের বিপক্ষে সত্যিকারের কন্ডিশনে খেলি, তবে এই ড্রপ হওয়া ক্যাচগুলো আমাদের অনেক ভোগাবে। অধিনায়ক হবার পর, আমি বলেছি, আমাদের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে, নয়তো বড় আসরের টুর্নামেন্ট জয় করা কঠিন হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এটি এমন একটি ক্ষেত্রে যেখানে  আমরা উন্নতি করতে পারি। আমি বোলিং এবং ব্যাটিং নিয়ে খুশি। কিন্তু আমরা যদি চারটি ক্যাচ না ফেলতাম  তাহলে আমরা ১১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পারতাম।”
প্রথম ম্যাচে গায়ানায় নিজেদের হোম কন্ডিশনের মত উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে উইকেট মন্থর ছিলো। এতে নিজেদের মত লাইন-লেন্থ বজায় রেখে বল করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি উইকেট নেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি। আর অভিষেকে উইকেট না পেলে, বল হাতে কিপটে ছিলেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। ৮ ওভারে ৩ মেডেনে মাত্র ১৬ রান দেন তিনি। নাসুমের বোলিং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারদের দারুন চাপে রেখেছে।
বৃষ্টির কারণে কমে আসা ম্যাচে, ৪১ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ৩১ দশমিক ৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫১ রান তুলে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই গায়ানার উইকেট ধীর গতির, যা বাংলাদেশের জন্য আনন্দের খবর। কারন সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ এই ভেন্যুতেই হবে।
প্রথম ম্যাচে সহজ জয়ের কারনে, দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নুরুল হাসান সোহান, আনামুল হক, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল: নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), শামারাহ ব্রুকস, ব্রান্ডন কিং, রোভম্যান পাওয়েল, কেসি কার্টি, কাইল মায়ার্র্স, গুদাকেশ মোতি, কিমো পল, শাই হোপ, আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ, এন্ডারসন ফিলিপ ও জেইডেন সিলেস। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.