জলঢাকায় কৃষি কাজে কদর বেড়েছে নারী শ্রমিকদের


জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি: কৃষি কাজে পুরুষ দিনমজুরের চেয়ে মজুরী কম হওয়ায় কদর বেড়েছে এখন নারী শ্রমিকদের। উত্তরের জেলা নীলফামারীর জলঢাকায় বীজতলা থেকে চারা তুলে কৃষকরা তাদের জমিতে ইরি-বোরো চারা রোপণ কাজের পালা ইতিমধ্যেই শেষ করেছেন।

এখন চলছে সেচ ও পরিচর্যার কাজ। এবছর জলঢাকা পৌর এলাকা সহ উপজেলার কৈমারী, শৌলমারী, ডাউয়াবাড়ী, গোলমুন্ডা, বালাগ্রাম, গোলনা, শিমুলবাড়ী, ধর্মপাল, মীরগঞ্জ, কাঠালী ও খুটামারা ১১টি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৫’শ হেক্টর জমিতে ইরি – বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গেলো জানুয়ারি হতে শুরু হয়েছে বোরো ধান আবাদের মৌসুম। এই ফসল যেন কৃষকদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবার ফলন ভালোই পাবে।

এ অঞ্চলে কৃষকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ইরি – বোরো আবাদের কাজে। উত্তরের সাথে দক্ষিনাঞ্চলেও কৃষি কাজের ভরা মৌসুম শুরু হওয়ায় এ অঞ্চলে সংকট দেখা দিয়েছে পুরুষ দিনমজুরদের।

তারা বেশি মূল্য পাওয়ার আশায় কাজের সন্ধানে দক্ষিণ অঞ্চলে চলে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান ক্ষেত পরিচর্যা কাজে নিয়োজিত রাবেয়া খাতুন নামের এক নারী শ্রমিক।

পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড দুন্দিবাড়ী এলাকার মৃত কছির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন জানায়, এবার ৭ বিঘা জমিতে ইরি – বোরো চাষাবাদ করছি। সময়মতো সার ও পানি দেওয়া হলেও রোয়া নিড়ানির জন্য ৩০০ থেকে সারে ৩৫০ টাকা মজরিতেও পুরুষ দিনমজুর খুজেঁ পাওয়া যাচ্ছে না। ভাগ্যে ৭ জনের একটি নারী কৃষি শ্রমিকদের গ্রুপ পাওয়া গেছে। তাদের মজরিও পুরুষদের তুলনায় অনেক কম। আগে ১০০ টাকা মজরিতে পাওয়া যেতো।

এখন কৃষি শ্রমিক সংকটের ফলে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দিতে হয়। সোমবার প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে এমন তথ্য চিত্র সামনে আসে। কথা হয় বোরো পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত ফুলমতি রায়, জামেনি বালা, সাবেত্রি রায়, রাধা রানী ও হরপিয়ার সাথে।

তারা জানায়, এখনতো সবখানে একাজ চলছে। শুনছি ঢাকা, কুমিল্লায় নাকি কামলার মূল্য বেশি, তাই পুরুষরা কাজের জন্যে বেশির ওদিকেই চলে যায়। আর সেকারনে আমাদের এদিক পুরুষ কামলা কম।

তাদের শ্রমের মুল্য জানতে চাওয়া হলে এ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানানো হয়, আগে এক বেলা খেয়ে আমরা ৫০/১০০ কাকায় কাজ করতাম। এখন পুরুষ কামলার অভাব, সেজন্যে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পাওয়া যায়। কোনো মাঠ পতিত নেই। চলছে মাঠ জুড়ে বোরো ধান আবাদের কর্মযজ্ঞ।

কৃষক আকবর আলী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সময়মতো বোরো ধান রোপন ও পরিচর্যা না করলে ফলন ভালো হবে না। তাই আবাদের প্রয়োজনে পরিবার পরিজন নিয়ে মাঠে কাজ করছি। মাঠে কৃষকরা যে গতিতে ইরি – বোরো আবাদে কাজ করছেন তাতে এবার লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশি পরিমাণ বোরো ধান ফলনের আশা করছেন।

এর পাশাপাশি এবার ভুট্টার আবাদও ব্যাপকভাবে করেছেন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। যার ফলন ধরা হয়েছে ১৬ হাজার মেট্রিকটন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি এরশাদ আলম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.