চেয়ারম্যানের টর্চার সেলে-গরু চুরির অপবাদে মুক্তিযোদ্ধাকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখলেন চেয়ারম্যান

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় গরু চুরির অভিযোগ তুলে ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আকবর আলী ওরফে ধনী (৮১)বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দড়ি দিয়ে বেধে চেয়ারম্যান বাড়ির টর্চার সেলে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
চেয়াম্যানে নিজ বাড়িতে তৈরি টর্চার সেলে একের পর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন সেই আলোচিত চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন। এর আগে এক যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আজ রোববাব (০৭ ফেব্রুরী) দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ পেয়ে হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী এলাকায় চেয়ারম্যানের নিজ বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নির্যাতনের শিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী (ধনী) উপজেলার উত্তর জাওরানী গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া সে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
আজ রোববাব (০৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আকবর আলী (ধনী) ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, ছেলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীকে নিজ বাড়ি থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও চৌকিদার তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর চেয়ারম্যান ও চৌকিদার ওই মুক্তিযোদ্ধাকে চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হলে মুক্তিযোদ্ধার বাঁধন খুলে দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীকে চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরে লোকজন ভিড় করলে তার হাতের বাধন খুলে দেওয়া হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা গরু চুরির অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান ও চৌকিদার জোরপূর্বক আমাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে রাখে।আমি অসুস্থ এজমা রোগী তার পরও আমাকে দড়ি দিয়ে তারা বেধে রাখেন। এর পর আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে থাকি।এ সময় দুই চেখে আমার পানি ঝড়তে থাকে। দেশ স্বাধীন করে এই প্রতিদান পেলাম আমি। আমি প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর সঠিক বিচার চাই।
স্থানীয়রা বলছেন,ছেলে অপরাধ করলে তার শাস্তি হবে। ছেলের অপরাধে কেন তার বাবা অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখা হল। একজন চেয়ারম্যান কি ভাবে বাবা বয়সী একজন কে গরু চুরির অভিযোগ তুলে বেধে রাখেন।এর বিচার হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাকে বেধে রাখা কিংবা কোন প্রকার মারধর করা হয়নি। তার ছেলে গরু চুরি সাথে জড়িত আছেন তাই তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আমার বৈঠক খানায় বসানো হয়েছে।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ঘটনা স্থালে ওসি তদন্তকে পাঠান হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৬ মে নুরুজ্জামান নামে এক যুবককে চেয়ারম্যানের ওই বাড়ির টর্চার সেলে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পর ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর ও ভাই মনসুর হেলাল।এর পর গত বছর ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন গ্রাম পুলিশ মাদকদ্রব্য নিয়ে পুলিশের নিকট আটক হয়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান হাসান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.