চাঁদা না পেয়ে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে ধর্ষণ, পলাতক প্রধান আসামী আশিকুল গ্রেফতার

বিশেষ প্রতিনিধি: র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সমাজের বিভিন্ন অপরাধের সঠিক উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়াও যে কোন চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য র‌্যাব সফলতার সহিত ছায়া তদন্ত করে আসছেন।
এর’ই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে অভিযান চালিয়ে কক্সবাজারে আটকে রেখে নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা আশিককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তারের পর থেকেই তাকে নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত আশিকের রয়েছে নিজস্ব গ্যাং বাহিনীও। ৩০ থেকে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট গ্যাং বাহিনী নানা অপকর্মে জড়িত ছিল।
মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ডে গ্রেপ্তার হওয়া আশিকের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) ২০২১ ইং সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে একটি সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। সেখানে আশিকের এসব কুকর্মের তথ্য তুলে ধরেন এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অন্ধকার জগতের এমন কোনো দিক নেই যেখানে আশিকের বিচরণ নেই। ব্লাইমেইলের মাধ্যমে পর্যটকদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল আশিকুল ইসলাম আশিকের অন্যতম পেশা। স্থানীয় লাইট হাউজে বসে এসব কাজ চালাতেন তিনি। এছাড়া স্থানীয় মাদক ব্যবসা, অস্ত্র কারবার ছাড়াও চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এসব অভিযোগে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে ১২-টি মামলা হয়। এসব মামলায় সে পাঁচবার গ্রেপ্তারও হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ২০১১ সালে এসএসসি পাসের পর বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত ছিলেন আশিক। এছাড়া নিজে গ্যাং বাহিনী খুলে শহরের সুগন্ধা এলাকায় ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট জোর করে কম টাকায় ভাড়া নিয়ে দ্বিগুণ ও তিনগুণ দামে ভাড়া আদায় করতেন। তাছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অবৈধভাবে দখল করে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
র‌্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তার আশিক কক্সবাজারে পর্যটক এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মূলহোতা। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ৩০-৩৫ জন। আশিক বিগত ২০১২ বছর থেকে কক্সবাজার পর্যটক এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। প্রথম ২০১৪ সালে অস্ত্র’সহ গ্রেপ্তার হয় পুলিশের হাতে। তার সিন্ডিকেট পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। পর্যটন এলাকায় বিভিন্ন হোটেলে ম্যানেজারের সঙ্গে যোগসাজসে ট্যুরিস্টদের ফাঁদে ফেলে ব্লাকমেইল করতো।
জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে সম্প্রতি কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টিও স্বীকার করে আশিক।
র‌্যাব জানায়, লাবনী বিচ এলাকার রাস্তা হতে ভিকটিমকে অটোরিকশায় করে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আশিক ও তার সহযোগীরা ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ভিকটিম ও তার পরিবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। গ্রেপ্তার আশিক ভিকটিমকে ধর্ষণ ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে আটক করে রেখে ভিকটিমের স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকার জন্য ফের মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর ভিকটিমকে হোটেলে আটকে রেখে আশিক সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
আশিকের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল কিনা জানতে চাইলে র‌্যাব মুখপাত্র জানান, যতটুকু আমরা জেনেছি আশিকের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। সে সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি রুহুল আমীন খন্দকার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.