ঘানার লড়াই থামিয়ে পর্তুগালের জয়ের হাসি

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: গোলহীন প্রথমার্ধে তেমন উত্তেজনা ছড়াতে পারেনি কোনো দল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে গেল ঘানা ও পর্তুগালের লড়াই। পেনাল্টি থেকে পর্তুগাল এগিয়ে যাওয়ার পর সমতায় ফিরে লড়াইয়ের আভাস দেয় ঘানা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি। তিন মিনিটের মধ্যে আরও দুই গোল করে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় পর্তুগাল। রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে রোনালদোরা ভাসেন জয়ের উচ্ছ্বাসে।
কাতার বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ বৃহস্পতিবার রাতে ঘানাকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে পর্তুগাল। দলের জয়ের ম্যাচে গোল করেন ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদো, জোয়াও ফেলিক্স ও রাফেল লিয়াও। ঘানার হয়ে গোল করেন আন্দ্রে ও উসমান।
স্টেডিয়াম ৯৭৪ এ বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হওয়া ম্যাচটির প্রথমার্ধে গোল শূন্য থাকে দুদল। দ্বিতীয়ার্ধে আসে ব্যবধান গড়া গোলগুলো।
পরিসংখ্যানের বিচারে পর্তুগাল এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের প্রথমার্ধে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছে ঘানা। গেল বিশ্বকাপে খেলতে না পারা দলটি ম্যাচের প্রথমার্ধে রক্ষণে দেখিয়েছে দৃঢ়তা। একের পর এক আক্রমণে ঘানাকে কোণঠাসা করেও প্রথমার্ধে সাফল্য পায়নি পর্তুগাল। ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদোর সুযোগ হাতছাড়ার পর প্রথমার্ধে ঘানার রক্ষণ ভাঙতে পারেনি পর্তুগিজরা।
এদিন ম্যাচের দশম মিনিটে বড় সুযোগ পেয়ে যায় পর্তুগাল। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানোর রোনালদো সেই সুযোগ হাতছাড়া করেন। ওই সময় মাঝমাঠ থেকে সিলভা উড়িয়ে মারেন ঘানার ডি বক্সে। সেখানে ছিলেন রোনালদো। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তিনি। গোলরক্ষকের সঙ্গে লেগে পড়ে যান মাটিতে। সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায় পর্তুগালের। এর দুই মিনিট পর আবারও হেডে সুযোগ আসে। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হেড নিয়ে পোস্টের বাইরে বল পাঠিয়ে দেন তিনি।
এরপর ৩১ মিনিটে জোয়াও ফেলিক্সের পাস পেয়ে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়ে দেন রোনালদো। কিন্তু বল জালে পাঠানোর আগে ফাউল করার ভুল করে বসেন রোনালদো। ফলে সেটাও হাতছাড়া হয়।
বাকি সময়ে আক্রমণে ধার দেখালেও ঘানার গোলরক্ষকের দেয়াল ভাঙতে পারেনি পর্তুগাল। ফলে গোল শূন্য থেকে বিরতিতে যেতে হয়েছে দুদলকে।
বিরতি থেকে ফিরেই পেনাল্টির ভাগ্যে গোলের খাতা খোলেন রোনালদো। ৬৫ মিনিটে তিনি নিজেই ফাউলের শিকার হন। তাতে পর্তুগাল পায় পেনাল্টি। সুযোগ হাতছাড়া না করে সফল স্পট কিকে লিড নেন রোনালদো। এই গোলের মাধ্যমে নতুন রেকর্ডে নাম লেখান সিআরসেভেন। এই নিয়ে পাঁচটি ভিন্ন বিশ্বকাপে গোল করার কীর্তি গড়লেন সদ্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছাড়া রোনালদো।
এই স্বস্তি অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে সমতায় ফিরে ঘানা। সেই ধাক্কা দ্রুত সামলে ঘুরে দাঁড়ায় পর্তুগাল। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পর্তুগাল।
কিন্তু না, তখনও উত্তেজনার আরও বাকি। ৮৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে ম্যাচে ফেরার আভাস দেয় ঘানা। পর্তুগিজদের স্তব্ধ করে গোলটি করেন উসমান। তবে আভাস দিয়েও শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ে আর সমতা ফেরাতে পারেনি ঘানা। ফলে পর্তুগাল পেল পূর্ণ ৩ পয়েন্ট। আর ঘানা মাঠ ছাড়ল হতাশা নিয়ে।
পুরো ম্যাচে ৬২ভাগ সময় বল দখলে রেখে ঘানার শিবিরে ১১বার আক্রমণ করে পর্তুগাল। যার ৫টি অনটার্গেট শট ছিল। অন্যদিকে প্রথমার্ধে রক্ষণ সামলাতে ব্যস্ত থাকা ঘানা দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের তেজ দেখায়। দ্বিতীয়ার্ধে ৯বার আক্রমণ করে আফ্রিকান দেশটি। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য পক্ষে আনতে পারেনি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.