গুতেরেসের হোটেলের পাশে হামলার কথা স্বীকার রাশিয়ার

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি হোটেলের পাশে হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেছে রাশিয়া। ওই হোটেলেই অবস্থান করছিলেন কিয়েভ সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে গুতেরেসের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয়ার ঘণ্টাখানেক পর এ হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অবস্থান করছিলেন গুতেরেস।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ হামলার দায় স্বীকার করেছে রাশিয়া। দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন হামলা চালিয়েছে তারা। হামলায় ভেরা গ্রিচ নামে এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত রেডিও লিবার্টির প্রযোজক ছিলেন বলে রেডিওটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তারা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দূরপাল্লার ‘বায়ুভিত্তিক অস্ত্রের’ হামলা চালিয়েছে। এতে কিয়েভের আর্টিওম ক্ষেপণাস্ত্র এবং স্পেস এন্টারপ্রাইজের ভবন ধ্বংস হয়েছে।
বিশ্ববাসীকে এ হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এমন ইচ্ছাকৃত এবং নৃশংস ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি রাশিয়া।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক জানিয়েছেন, রাশিয়ার ছোড়া কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি জাতিসংঘ মহাসচিব যেই হোটেলে অবস্থান করছেন, তার কাছেই আঘাত হেনেছে।
যদিও সে সময় মহাসচিব হোটেলে ছিলেন না। তিনি ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে আলোচনায় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
বিবিসিকে গুতেরেস বলেছেন, ‘আমি অবাক হয়েছি, যে শহরে আমি অবস্থান করছি, সে শহরেই দুটি ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরিত হয়েছে। আসলে এটি এক নাটকীয় যুদ্ধ। আমাদের এ যুদ্ধ থামাতে হবে এবং এ যুদ্ধের জন্য অবশ্যই একটি সমাধান বের করতে হবে।’
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ এ হামলার বিষয়ে বলেন, এটি মহাসচিবের নিরাপত্তা ও বিশ্বের নিরাপত্তার ওপর একটি হামলা।
গুতেরেস কিয়েভ সফরের আগে মস্কো সফর করেন। ওই সফরে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এতে ইউক্রেনের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
মহাসচিবের আগেই কিয়েভ সফরে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ অনেক পশ্চিমা নেতাই কিয়েভ সফরে গিয়েছেন। তাদের সফর চলাকালীন আশপাশে কোনো ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরের সময় এমনটি প্রথমবার ঘটল। (সূত্র: দ্যা গার্ডিয়ান)

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.