খুমেক হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মচারি ঠিকাদারকে হুমকিদাতা কে এই আরিফ? জনমনে প্রশ্ন

খুলনা ব্যুরো: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মচারী সরবরাহকারী ঠিকাদারকে গুলি করার হুমকিদাতা কে এই আরিফ তা’ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
কিভাবে তার হাসপাতলে আগমন এবং ধীরে ধীরে পরিচালকের আস্থাভাজন হওয়া থেকে শুরু করে এক পর্যায়ে সিসি ক্যামেরা, মাইক ও ডিজিটাল প্যানা স্থাপনা সর্বোপরি আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগের একচ্ছত্র ভূমিকা পালনের নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে নানান তথ্য।
খুমেক হাসপাতালের পর্দার আড়ালের ক্ষমতাধর কে এই আরিফুজ্জামান আরিফ তা’ নিয়েই তৈরি হয়েছে আজকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে খুমেক হাসপাতালে আউটসোর্সিং ঠিকাদার মোঃ ফারুক হোসেনকে গুলি করার হুমকিদাতা মোঃ আরিফুজ্জামান মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালক উল্লেখ করে আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিভিন্ন দৈনি পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশ হলে ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন হেমায়েত বলেন, আরিফ নামের ওই ব্যক্তি মাছরাঙ্গার কেউ নন। তিনি যদি নিজেকে ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পরিচয় দিয়ে থাকেন সেটি ভুয়া।
মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিস এবং কন্ট্রাক্ট ক্লিনিং সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এমন বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এই আরিফ ?
এ প্রশ্নের জবাব খুঁজতে আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮ টা ৪১ মিনিটে ফোন দেয়া হয়েছিল হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এ টি এম এম মোর্শেদের মোবাইলে। কিন্তু এসময় এক নারী ফোনটি রিসিভ করে জানান, ‘স্যার অপারেশন করছেন’।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুমেক হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালে আরিফের আগমন। ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার নাম ব্যবহার করে তার আগমনের কারণেই তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক ও বর্তমান পরিচালক ডাঃ এটিএমএম মোর্শেদ ছিলেন অনেকটা অসহায়।
এক পর্যায়ে কোটেশনের যাবতীয় কাজ বাগিয়ে নিতে থাকেন আরিফ। একে একে হাসপাতলে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো, ঘোষণার জন্য মাইক স্থাপন এবং জরুরি বিভাগের সামনে ডিজিটাল বোর্ড স্থাপনের কাজ করেন আরিফ। যখন ২০৭ জন আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগ হয় তখন অন্যান্য ঠিকাদারকে দরপত্র কিনতে না দিয়ে নিজে কাজটি বাগিয়ে নেন।
প্রথমে মাছরাঙ্গা সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পরিচয় দিয়ে যেমন ২০৭ জন কর্মচারী নিয়োগ করা হয় তেমনি সর্বশেষ আরো ৯৫ জন কর্মচারী নিয়োগে ভূমিকা পালন করেন মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ।
এদিকে, প্রতিটি কর্মচারীর কাছ থেকে দুই থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে এসব নিয়োগ দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্যাডে অঙ্গীকারনামা আবার কারো কাছ থেকে সাদা প্যাডে স্বাক্ষর নেয়া হয়। যেখানে লিখে নেয়া হয় সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কোন টাকা না দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। অর্থাৎ কৌশলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিলেও লিখিত রেখে দেয়ায় এটি প্রমাণ করা কঠিন।
কিন্তু অনেক লোক টাকা দিয়েও চাকরি না পাওয়ায় তারা বিভিন্ন স্থানে বিষয়টি বলে দেয়ায় এটি প্রকাশ পায়। এমনকি আরিফ যাদের নাম ব্যবহার করে লোক নিয়োগ দেন তারাও তার উপর ক্ষিপ্ত হন।
বিশেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফের নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হন। কেননা যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েক কোটি টাকা আরিফ নামের ওই ব্যক্তি হাতিয়ে নিয়েছেন তার দায়ভার ওই দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকেই বহন করতে হবে।
এজন্যই শেষ পর্যন্ত ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দু’টির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন মাছরাঙ্গার কথিত পরিচালক  আরিফুজ্জামান আরিফের নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গুলির হুমকির শিকার হন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.