কৃষ্ণাঙ্গ বীরকে ‘গুড বাই’ জানানোর দিনেও জনতার কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদের ভাষা

ছবি: সংগৃহীত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের হাতে নিহত হওয়া জর্জ ফ্লয়েডের শেষ কৃত্য সম্পন্ন হলো ব্যাপক জনসমাগমের মধ্য দিয়ে। করোনাভাইরাসের বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (০৮ জুন) হিউস্টনে তাকে চির বিদায় জানাতে সমবেত হয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। কৃষ্ণাঙ্গ বীরকে ‘গুড বাই’ জানানোর দিনেও মানুষদের কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদের ভাষা।

দক্ষিণ হিউস্টনে যেখানে ফ্লয়েড বেড়ে উঠেছিলেন, সেখানকার ফাউন্টেন অব প্রেইসে হয় ফ্লয়েডের শেষ কৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা। দীর্ঘ লাইন ধরে ফ্লয়েডের সোনালি কফিনে ফুল দিয়ে সম্মান জানায় স্থানীয় বাসিন্দারা।

ফ্লয়েডের “আই কান্ট ব্রিথ” হয়ে উঠেছে প্রতিবাদকারীদের মূল স্লোগান। হিউস্টনে ফ্লয়েডকে চির বিদায় জানাতে আসা মানুষদের গায়েও ছিল সেই স্লোগান লেখা টি-শার্ট। তবে আগত শোক সন্তপ্তদের চার্চের ভেতর প্রবেশ করার সময় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নির্দেশনা অনুযায়ী অবশ্যই মাস্ক পরতে হয়েছে। ফ্লয়েডের কফিনের পাশে বেশিক্ষণ দাঁড়ানোর সময়ও দেওয়া হয়নি তাদের।

ফ্লয়েডকে শেষ বিদায় জানাতে স্ত্রী ও দুই শিশু ছেলে সন্তানসহ সপরিবারে উপস্থিত হন ৪১ বছর বয়সী কেলভিন শেরড। তাদের সবার পরনে ছিল ‘আই কান্ট ব্রিথ’ লেখা টি-শার্ট। এই বাবা বলেন, “আমার ছেলেদের নিয়ে এখানে আসতে পারার মানেটা অনেক বড়। এই সময়টা ইতিহাসের অংশ। তারা মনে রাখবে যে, তারাও এটার অংশ হয়েছিল। শুধু গায়ের রঙের ওপর ভিত্তি করে নয়, এটা আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছে।”

জোসেপ কোয়াল যিনি ফ্লয়েডের সঙ্গে একই হাইস্কুলে পড়েছেন, তার কাছে এই মৃত্যুটা যেন আরও ভারী কিছু। কোয়াল বলেন, “আমার জানা মতে, আমার প্রতিবেশীদের মধ্যে স্কলারশিপ পাওয়া সেই প্রথম ব্যক্তি।”

জোসেপ কোয়ালের স্ত্রী ক্যান্ডিস কোয়ালস জানান, দেশের সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এটা দেখতে পেরে তার খুব ভালো লাগছে। “এটা পরিবর্তনের সময়। জুলুম নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতা ও বর্ণবাদ থেকে আমাদের বের হয়ে আসার সময়।”

গত ২৫ মে মিনেপোলিসে শ্বেতাঙ্গ এক পুলিশ অফিসার গলায় হাঁটু চেপে শ্বাস রোধ করে ৪৬ বছর বয়সী ফ্লয়েডকে হত্যা করে। এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন আরও তিন পুলিশ সদস্য। মৃত্যুর সময় ফ্লয়েড বার বার বলছিলেন- “আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না।” এ ঘটনার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভের আগুন। এই প্রতিবাদ মিছিল গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.