আদুরী আর মেয়ে নাই, ছেলে হয়ে গেছে !!!

বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় আদুরী আক্তার (১৯) নামে এক যুবতী গত তিন বছর আগে অলৌকিকভাবে যুবকে পরিনত হয়েছে। তিনি এখন বিবাহিত। তার স্ত্রী বর্তমানে ৬ মাসের অন্তঃসত্বা।

২০১৭ সালের প্রথমদিকে চট্টগ্রামের রাউজানে বিবাহ করেন তিনি। আদুরী এখন মা-বাবার দেয়া নাম পরিবর্তন করে শ্বশুর বাড়ির দেয়া নাম সানি ইসলামে পরিচিত। আদুরী ওরফে বর্তমান সানি ইসলাম শরখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের খেজুরবাড়ীয়া গ্রামের স’মিল শ্রমিক ছগির মুন্সীর তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে আদুরী মেজো।

ছগির মুন্সী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ২০১০ সালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কাজের সন্ধানে চট্রগ্রামে যাই। সেখানে গিয়ে ছোটোখাটো একটি ব্যবসা করি। এরপর ২০১৭ সালের দিকে দেখি আদুরী মেয়েদের সঙ্গ দিতে শুরু করে। আর ছেলেদের মত আচরণ করতে থাকে। এসব দেখে আমার লজ্জা লাগে।

ভাবছি সমাজে মুখ দেখাবো কি করে। এজন্য ওরে সারাক্ষণ ঘরের মধ্যে থাকতে বলতাম কিন্তু আদুরী আমাদের কোনো কথাই শোনেনা। রাতে পাশের ঘরে বান্ধবীর বাসায় ঘুমতে চায়। ওর এমন আচার আচরণ দেখে বিরক্ত হয়ে সব সময় বকাঝকা করতে থাকি। তাতেও কোনো কাজ হয়না। এরপর একদিন শিকল দিয়ে বাসায় বেঁধে রাখি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে দেখি শিকল ছুটে চলে গেছে।

এরইমধ্যে একদিন পাশের ঘরের ওর এক বান্ধবী এসে বলে, আদুরী সত্যি ছেলে হয়ে গেছে। ও আমার সাথে খারাপ আচরণ করছে তাই আমি বুঝেছি। তারপর থেকে আদুরী অন্য এলাকায় বাসা নিয়ে থাকা শুরু করে আর গার্মেন্টসে চাকুরী করেন।

মানুষের নানান প্রশ্নে লজ্জায় আমারা আড়াই বছর আগে আদুরীকে চট্টগ্রামে রেখে পরিবারের অন্য সবাই বাড়িতে চলে আসি।

গত ৫ মে শুনি আদুরী পুতুল নামক এক মেয়েকে বিবাহ করেছে এবং বউ নিয়ে বাড়িতে আসতে চায়। গত ১০ মে স্ত্রী পুতুলকে নিয়ে আদুরী প্রথমে মংলায় ওর মামার বাসায় ওঠে। সেখানে দু’দিন থাকার পর বাড়িতে আসলে করোনার কারণে ওদের ১৪ দিন আমার বাবার বাড়িতে আলাদা থাকতে বলি। তবে আমি বাবা হয়ে ওর সম্পর্কে সবকিছু জেনে দেখলাম ও এখন আর আমাদের মেয়ে নাই পুরাপুরি ছেলে হয়ে গেছে। এছাড়া ওর স্ত্রী এখন ৬ মাসের গর্ভবতী।

মেয়ে থেকে পরিবর্তন হয়ে কিভাবে ছেলে হলো তা জানতে চাইলে আদুরী বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে থেকে আমার শরীরের ভেতর মেয়েদের প্রতি আকর্ষন জাগতে শুরু করে। আস্তে আস্তে লিঙ্গ পরিবর্তন হতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি পুরুষ হয়ে যাই। আমার এ পরিবর্তন বাড়ির কেউ বিশ্বাস করতে চায় না।

তাই গত দুই বছর আগে চট্টগামের রাউজানের ইসামনি পুতুল নামে একটি মেয়েকে তার পরিবারের সম্মতিতে বিবাহ করি। এরপর আমার স্ত্রী গর্ভবতী হলে তাকে নিয়ে বাড়িতে আসি। যাতে সবাই বিশ্বাস করে যে আমি আর তাদের মেয়ে নাই।

এ ঘটনায় এলাকায় কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ও হরমোন বিশেষজ্ঞ ডা. রফিকুজ্জামান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমরা সাধারণত ছেলে থেকে মেয়ে হতে চাওয়া রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা করিয়ে থাকি।

তবে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়া ক্রিটিক্যাল বিষয়।

এটা কিভাবে হলো না দেখে বলা যাবেনা। তবে, মনে হচ্ছে পরিবার আগে থেকে বিষয়টি লুকিয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.