উল্লাপাড়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসাইনমেন্টের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: করোনাকালে বিশেষ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উল্লাপাড়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, জনপ্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে  ৪শত থেকে ৫ শত পর্যন্ত টাকা দাবি করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে টাকা তোলার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন,আমরা এখনো কোন সরকারি নির্দেশনা পাইনি। তবে এরকম  অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বিদ্যালয় গুলোকে হুশিয়ারি দিয়ে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এভাবে টাকা তোলার কোনো অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি স্থগিত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ৩১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা পাঠানো হয় সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তাতে ছয় সপ্তাহে ছয়টি মেধা যাচাই পরীক্ষার পাশাপাশি সিলেবাস নির্ধারণ এবং প্রশ্নের নমুনাও দিয়ে দেয়া হয় নির্দেশনায়। মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে অভিভাবকদের ডেকে সিলেবাস এবং নমুনা প্রশ্ন বিতরণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছয় সপ্তাহে ছয়টি অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে স্কুলে জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, মন্ত্রণালয় থেকে আসা চিঠিতে বলা হয়েছে অ্যাসাইনমেন্ট অনুযায়ী মেধা যাচাইয়ের কথা। তাও আবার বাড়িতে থেকে সেই মেধা যাচাইয়ে অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা। স্কুলে গিয়ে সিলেবাস আর নমুনা প্রশ্নপত্র নিয়ে আসবেন অভিভাবকরা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করবে এবং অভিভাবকরা তা স্কুলে জমা দেবেন।
সবকিছু এভাবে স্পষ্ট থাকা সত্বেও ওই চিঠির সূত্র ধরেই উল্লাপাড়ায় প্রতিটি  স্কুলে বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে শিক্ষার্থীদের সুস্থ থাকা নিশ্চিত করতে স্কুল বন্ধ রেখেছে সরকার, সেখানে টাকা তোলার জন্য অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অভিভাবকদের না ডেকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে বলছে। এমনকি অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা আনতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর চাঁপ সৃষ্টি করা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্কুল ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায় (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) পরীক্ষার কথা বলে  ছাত্র-ছাত্রীর কাছ  থেকে শিক্ষকরা ৪শ থেকে ৫শ টাকা করে করে নিচ্ছে। আমি একজন ক্ষুদ্র চা বিক্রেতা। করোনার কারণে এমনিতেই সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পরেছে। এখন স্কুলের শিক্ষকদের দাবিকৃত এই টাকা আমি কোথা থেকে দেব?
টাকা তোলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরীক্ষার নাম করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর প্রধানরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমরা খরচ বাবদ ৫০ টাকা নিচ্ছি এর বেশি তো আমরা নেই নাই। তারা আরও বলেন, করোনার শুরু থেকে অদ্যবধি বিদ্যালয়ের কোনো আয় নেই। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে কাউকে বাধ্য করা হচ্ছে না দাবি করে শিক্ষকরা আরও বলেন, যারা সামর্থ্যবান, কেবল তাদের কাছ থেকেই টাকা নেয়া হচ্ছে।  
এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমেদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টা শুনেছি। তবে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কমকর্তাকে বলা হয়েছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া জন্য।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি মো: হারুনঅররশিদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.