উপাচার্য না থাকায় জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না হাবিপ্রবি প্রশাসন 

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ৬ষ্ঠ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম’র মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১শে জানুয়ারি। মেয়াদ শেষের চার (৪) মাসেও উপাচার্য পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমের জরুরি সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল ও রিজেন্ট বোর্ডের সদস্যদের সম্মতিক্রমে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছে না হাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে শুরু করে অবকাঠামোগত নানা কাজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ১ বছর ২ মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সুদীর্ঘ সেশনজটে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। নেওয়া হচ্ছে না স্থগিত পরীক্ষা গুলো। এদিকে গত চার (৪) মাস ধরে নেই স্থায়ী উপাচার্য। দেশের পরিস্থিতি, দীর্ঘ সেশনজট, অর্থনৈতিক অবস্থাসহ বেশকয়েকটি কারণে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শাখা থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম’কে চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। গত ৩১ জানুয়ারি তাঁর মেয়াদ শেষ হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৯ দিন আগেই ছাত্রলীগের আন্দোলনের মুখে ভোররাতে স্বস্ত্রীক ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন উপাচার্য। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদারকে রুটিন দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে চিঠি দেন। কিন্তু ফেব্রুয়ারি আদেশ অনুসারে রুটিন দায়িত্বও শেষ হয়ে যায়। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২২শে ফেব্রুয়ারি’২১ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ’কে স্থায়ী উপাচার্য নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত রুটিন দায়িত্ব পালনের অফিস আদেশ জারি করে।
রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগ হলেও একজন স্থায়ী উপাচার্য যে কার্যসম্পাদন করতে পারেন সে কার্যক্রম একজন রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য করতে পারেন না। নিদিষ্ট সীমাবদ্ধ থেকে উপাচার্যের কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হয় রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একাডেমিক কাউন্সিল ডাকতে পারেন না রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অতিদ্রুত উপাচার্য নিযুক্তের বিষয়টি জানানো হলেও এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।এদিকে উপাচার্য না থাকায় অর্থ সংক্রান্ত অনুমোদন, বিদেশ গমন, বিভিন্ন সভা-সেমিনার, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে রয়েছে।
এব্যাপারে রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. বিধান চন্দ্র হালদার বিটিসি নিউজকে বলেন, স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,কর্মকর্তা,কর্মচারীদের নিয়মিত পদোন্নতি ব্যাহত হচ্ছে “।
তিনি আরও জানান,” স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কার্যক্রম সচল রাখতে একাডেমিক কাউন্সিল ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাও ডাকা সম্ভব হচ্ছে না। এতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমের জরুরি সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই অতিদ্রুত উপাচার্য নিযুক্ত জরুরি বলে মনে করছি “।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর হাবিপ্রবি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি মোঃ মিরাজুল আল মিশকাত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.