উজিরপুরে আদালতের রায় মানছেন না মুক্তিযোদ্ধা ভাতিজাসহ স্থানীয়দের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি

উজিরপুর প্রতিনিধি:  উজিরপুরে আদালতের রায় মানছেন না মুক্তিযোদ্ধা। এলাকার মানুষের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে হয় রানির অভিযোগ। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের গাববাড়ি গ্রামের মৃত আবুল হাসেম হাওলাদারের ছোট ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান তার আপন ভাইয়ের ছেলে ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করে চলছে।

সূত্রে জানা যায়, গাববাড়ি মৌজার ২২৭ নং খতিয়ানের ৮০ ও ১৫৩ নং দাগের রেকর্ডীয় মালিক আব্দুর রহমান ও আব্দুর ওহাব ১৯৭২ সনে ২৮৮৮ নং সাফ কবলা দলিল মূলে গাববাড়ি গ্রামের মৃত আবদুল হাসেম হাওলাদারের তিন ছেলে আব্দুল মন্নান হাওলাদার, আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানের নামে ৪০ শতাংশ জমি ক্রয়সূত্রে রেকর্ড হয়।

সেই মোতাবেক তিন ভাই সমান অংশে ভোগ দখল করে নামজারী সংশোধন করে নেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান ১৯৯৮ সালে একই মালিকের অংশ হইতে ক্রয়সূত্রে মালিক জবেদ আলীর কাছ থেকে একই খতিয়ানের ৭০,৮০,১৫৩,৩৪৭,৪২৭ পাঁচটি দাগ হতে গোপনে পুনরায় ৪০ শতাংশ জমি সাফ কবলা দলিল করেন। দলিল নং-১১৫।

এমনকি ঐ জমি তিনি নামজারীও করেননি। দলিলের ৪/৫ বছর পরে পূর্বের ক্রয়কৃত ৮০ ও ১৫৩ নং দাগ হতে ৪০ শতাংশ জমি একাই ভোগ দখলের চেষ্টা চালান। দখল করতে না পেরে তিনি ২০০৭ সালে বরিশাল সহকারী জজ আদালতে একটি বাটেরা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ১২ বছর পরে ২০১৯ সালের ১ আগষ্ট উভয় পক্ষের আইনজীবির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সহকারী জজ ফাতেমা তুজ জোহরা মুনা মামলার রায় প্রদান করেন।

মামলার রায়ে তিনি উল্লেখ করেন বাদী হাবিবুর রহমান ৮০ ও ১৫৩ নং দাগ হইতে পূর্বের ন্যায় ১৩.৩৩ শতাংশ জমি ভোগ দখল করিবেন। রায় পাওয়ার পরে বিবাদী পক্ষ তার আপন ভাতিজারাসহ স্থানীয় গণ্যমান্যদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমানকে ১৩.৩৩ শতাংশ জমি মাপজোখ করে দখল বুঝে নিয়ে অনুরোধ করেন।

এ সময় তিনি ১৪ সেপ্টেম্বর শালিস বৈঠকের মাধ্যমে জমি বুঝে নেওয়ার জন্য ওয়াদাবদ্ধ হন। কিন্তু সকলকিছু উপেক্ষা করে গত ৮ সেপ্টেম্বর উজিরপুর মডেল থানায় আপন ভাতিজা ইউসুফ হাওলাদার, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি রহিম হাওলাদার, খোকন হাওলাদার, রব চৌকিদার, আলাউদ্দিন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর মুন্সি, নাসির উদ্দিন হাওলাদারের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ছাড়া ২০০২ সালে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে একটি শালিস বৈঠকে একটি রায় প্রদান করেন। উক্ত রায়েও হাবিবুর রহমানকে সম্পত্তির তিন ভাগের এক ভাগ ভোগ দখলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। সকল কিছু উপেক্ষা করে একের পর এক মামলা দেওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এমনকি তিনি এই মামলা দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তাদের বিরুদ্ধে আরো বিভিন্ন মামলা দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করছেন। তার বিভিন্ন মামলার ভয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ট। এই জমিতে বর্তমানে শান্ত বাজার নামে একটি মার্কেট রয়েছে।

ইউসুফ হাওলাদার বিটিসি নিউজকে জানান, শান্ত বাজারের এই জায়গাটি আমরা সমান তিনভাগে ভাগ করে ভোগ দখল করি। কিন্তু আমার চাচা আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

নিজের দায়ের করা মামলার রায় নিজেই মানছেন না। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বিটিসি নিউজকে জানান, আমি একজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আমি আমার মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছি।

তারা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়, তাই থানায় মামলা করেছি।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর উজিরপুর প্রতিনিধি আঃ রহিম সরদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.