আদমদীঘিতে বীর নিবাস নির্মানে ধীরগতি. বর্ষায় দুর্ভোগের আশংকা


আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় কাজের ধীরগতির কারনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ভুক্তভোগি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে। তারা পুরাতন মাটির বসতবাড়ি ভেঙ্গে মাথা গোঁজার জন্য অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছেন। তারা আসন্ন কাল বোশেখী ঝড় ও বর্ষায় দুর্ভোগের আশংকায় জরুরি ভাবে তাদের বীর নিবাস নির্মান সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিয়েও সুফল মিলছেনা বলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেছেন।
জানাযায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে আদমদীঘি উপজেলায় ২য় পর্যায়ে ৩২জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক প্রতিটি তিন কক্ষ বিশিষ্ট বীর নির্বাস নির্মানে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
ট্রেন্ডারের মাধ্যমে এসব বীর নিবাস নির্মানের জন্য মেসার্স সুমা এন্টার প্রাইজ ১৬টি ও স্বপ্নীল ইঞ্জিনিয়ার ট্রেডার্স ১৬টি বাড়ি নির্মানের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ১০ জানুয়ারী সারাদেশে ২য় পর্যায়ের বীর নিবাস নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী পর স্থানীয় প্রশাসন বীর নিবাস নির্মানের জায়গা নির্ধারন করার জন্য ৩২জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে তাগাদা দেন। এরপর অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পুরাতন জরাজীর্ণ মাটির তৈরী বাড়ি ভেঙ্গে বীর নিবাসের জায়গা নির্ধারন করেন। বাড়ি ভাঙ্গার পর তারা পরিবার নিয়ে কেউ টিনের বেড়া দিয়ে আবার কেউ অন্যের বাড়িতে পরিবার নিয়ে সাময়িক ভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর পর দীর্ঘ ৭০ দিন অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক ভাবে ১৩টি বীর নিবাসের ভিত্তি স্থাপন ও কিছু কিছু বীর নিবাসে ইট বালু দিয়ে গাথুনি করলেও সিংহ ভাগ বীর নিবাস নির্মানে কোন কার্যক্রম করা হয়নি। যেসক বীর নিবাস নির্মান শুরু করেছে তাও চলছে ধীর গতিতে। ওইসব শুরু করা বীর নিবাসে নির্মান শুরুর আগেই পানির জন্য সাব মারসিবল পাম্প বসানো বিধান থাকলেও কোন বীর নিবাসেই বসানো হয়নি। ফলে পানি অভাবে ইট বালুর গাথুনির কিউরিং কাজ দুর্বল হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার ও সাদেক আলী বলেন, মাটির ঘর ভেঙ্গে পরিবার নিয়ে টিনের বেড়ার ঘরে কষ্ট করে বসবাস করছি। তাদের বীর নিবাস নির্মানে কিছুটা অগ্রগতি হলেও বেশ কিছুদিন যাবত কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে রয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী বলেন, তার বীর নিবাস নির্মানে শুধু ভীত করে ফেলে রাখা হয়েছে। কাজের কোন অগ্রগতি নেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান বলেন, কাজ শুরুর আগেই পানি সরবরাহের জন্য সাব মারসিবল পাম্প স্থাপন না করার কারনে ইট বালুর গাথুনি কাজে পর্যাপ্ত কিউরিং হচ্ছেনা।
এছাড়া ঠিকাদারের অবহেলায় কাজের ধীর গতির কারনে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের আশাংকা করছি। এ কাজের ঠিকাদার রানা আহম্মেদ জানায়, বীর নিবাস নির্মানের বিল না পাওয়ায় কাজের গতি কমেছে।
উপ সহকারি প্রকৌশলী রশিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, কিছু দিনের মধ্যে ঠিকাদার বিল পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, দ্রুত বীর নিবাস নির্মান করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার টুকটুক তালুকদার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বীর নিবাস নির্মানে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় হচ্ছে। ঠিকাদারদের কাজের বিল প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে অবগতি করা হয়েছে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.