অবশেষে ৩০ ঘন্টা পর সুন্দরবনে আগুন নিভেছে, তদন্ত কমিটি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে

বাগেরহাট প্রতিনিধি: পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের দাশের ভারনী টহল ফাঁড়ি এলাকার বনে লাগা আগুন ৩০ ঘন্টাপর নিভেছে ।
গত সোমবার (-৩ মে) সকাল ১১ টায় লাগা আগুন গতকাল মঙ্গলবার (০৪ মে) বিকালে নিভেছে বলে নিশ্চিত করেছে বাগেরহাট ফায়ারসার্বিস ও পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।
বনের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়া এই আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করা শরণখোলা মোড়েলগঞ্জ ও বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট, বন বিভাগ ও সুন্দরবন সুরক্ষায় ভিটিআরসি টিমের সদস্যরা গত সোমবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার দূর্গম বনের ভিতর ফায়ার সার্ভিসের পানির পাইপ টেনেও ঘটনাস্থলে পৌছাতে পারেনি।
এরপর রাতের কারনে আগুন নেভানোর পাইপ টানার কাজ বন্ধ করে আজ বুধবার সকালে লোকালয় থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে ঘটনাস্থলে রওনা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ অন্যরা। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ৬ঘন্টা পানি মারার পর আগুন সম্পূর্ন নিভেছে বলে জানিয়েছে বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক মো. সরোয়ার হোসেন সুন্দরবন নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে এই আগুন লাগার কারন অনুসন্ধ্যানে সুন্দরবন বিভাগের গঠিত ৩ সদস্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন। এই কমিটি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
অপর দিকে সুন্দরবন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবনে ১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৮০ একর বনভূমি। এর আগে চলতি বছর ৮ ফেব্রæয়ারি সুন্দরবনের চাদপাই রেঞ্জের নাংলীতে অগ্নিকান্ডে এক একর বন পুড়েছিল।
এছাড়া ২০১৭ সালের ২৬ মে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন আবদুল্লাহর ছিলায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ওই আগুনে প্রায় পাঁচ একর বনভূমির ছোট গাছপালা,লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক মো. সরোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, শরণখোলা ,মোড়েলগঞ্জ ও বাগেরহাটের তিনটি ইউনিট আগুন লাগার ত্রিশ ঘন্টাপর সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়েছে। আগুন লাগার যায়গাটা বেশ দূর্গম বনের ৪ কিলোমিটার মধ্যে হওয়ায় পানি বেশ খানিকা দূরে। এজন্য আগুন নেভাতে আমাদের কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, গত সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ফাঁড়ির অদূরে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখতে পায় বনকর্মীরা। তারা সেখানে যেয়ে দেখে কোথাও কোথাও ধোঁয়ার কুন্ডলি আবার কোথাও কোথাও আগুন জ¦লছে। এই বনে বলা, গেওয়া ও লতাগুল্ম জাতীয় গাছপালা রয়েছে।
আগুনের খবর স্থানীয়দের জানানো হলে তারা আমাদের সাথে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছে। আগুনের বিস্তৃতি যাতে সব এলাকায় ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য স্থানীয়দের নিয়ে একদিকে পানি ছিটানো অন্যদিকে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়েছিল।
আজ বুধবার বিকালে আগুন সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়েছে। জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের ফেলে দেয়া আগুন থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারন করেন তিনি। তবে কতটুকু এলাকায় আগুন ছড়িয়ে কি ধরনের গাছপালা পুড়ছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেয়ার পর নিশ্চিত করে বলা যাবে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.