৩৮ বছর ধরে খেজুর রস সংগ্রহ করছেন হারুনর রশিদ


নাটোর প্রতিনিধি: এলাকায় খেজুর গাছী নামে পরিচিত হারুনর রশিদের বয়স এখন সত্তর ছুঁই ছুঁই। নিজের জমি জমা তেমন নেই বললেই চলে। শীতের কয়েক মাস খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং সেই রস থেকে গুড় উৎপাদন করে যে আয় হয় সেই আয়ের টাকা দিয়েই সারা বছর সংসার চলে গাছী হারুনর রশিদের। এভাবেই জীবনের ৩৮ বছর সময় পার করেছেন তিনি। গাছী হারুনর রশিদের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলার জোড় মল্লিকা গ্রামে।
সরেজমিনে জোড় মল্লিকা গ্রামে দেখা হয় খেজুর গাছী হারুনর রশিদের সাথে। গাছী হারুনর জানান, এবছর তার খেজুর গাছ আছে ২৩ টি। নিজে ৪ টি আর বাকি ১৯ টি লিজ নেওয়া। মৌসুমে ৩ কেজি গুড় দেওয়ার শর্তে ১৯ টি গাছ লিজ নিয়েছেন তিনি। এই ২৩ টি গাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে গুড় উৎপাদন করছেন ২মণ থেকে আড়াই মণ। বাজারে প্রতি মণ ঝোলা গুড় বিক্রয় করছেন ৩হাজার ৫শত টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায়। তাতে সপ্তাহে তার আয় হচ্ছে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
গাছী হারুনর জানান, আবহাওয়া অনুকুল থাকলে মৌসুমে গড়ে ৩ মাস থেকে ৪ মাস খেজুর রস সংগ্রহ করা যায়। গতবছর তার এই ২৩ টি গাছ থেকে আয় হয়েছিল ৬৫ হাজার টাকা। এবছর গুড়ের দাম বেশি থাকায় ১ লক্ষ টাকার বেশি আয় করার আশা করছেন তিনি।
শীতের মৌসুমে রস সংগ্রহের কাজ ছাড়াও গাছী হারুনর রশিদ বছরের অন্য সময়ে তাল গাছ, খেজুর গাছ, নারিকেল গাছ সহ বিভিন্ন গাছ ঝড়ার কাজ করে বাড়তি আয় করেন।
এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে সংসার হারুনর রশিদের। দুই সন্তানকেই শিক্ষিত করেছেন তিনি। কয়েক বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছেন। সব মিলে নিজেকে একজন সুখি মানুষ হিসাবে দাবি করেন গাছী হারুনর রশিদ।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সেলিম রেজা বলেন, এই শীত মৌসুমে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন করে অনেকেই সংসারের বাড়তি আয় করে থাকেন। দেশে খেজুর গুড়ের অনেক চাহিদা আছে। আমরা কৃষকদেরকে জমির আইলে ও বাড়ির পাশে পতিত জায়গায় খেজুর গাছ রোপণের পরার্মশ দিচ্ছি। এছাড়া গাছীরা যাতে পরিস্কার পরিছন্ন এবং স্বাস্থ্যসম্মত খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করে বাজারজাত করতে পারে সেদিকেও নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.