১৯ বছরে পা রাখলো কুয়েট

খুলনা ব্যুরো: শিক্ষা-গবেষণায় দেড় যুগ পূর্ণ করে ১৯ বছরে পা রাখলো খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট)। আজ বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি।

২০০৩ সালের আজকের দিনে (০১ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠা লাভ করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। এবছর ১৮ তম বর্ষ পূর্ণ করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি।
ভৈরব-রূপসা বিধৌত এ পাদপীঠে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবছর জাকজমকপূর্ণভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করলেও করোনা মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বছর সংক্ষিপ্ত আয়োজন গ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্বোধন, বৃক্ষরোপণ, মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, কুয়েটের অর্জনঃ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত-প্রেজেন্টেশন (অনলাইনে), আলোচনা সভা (অনলাইনে) এবং দোয়া মাহ্ফিল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন এবং সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর। তিঁনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় সকলের সহযোগিতা কামনা করে দিবসটি পালনের অনুষ্ঠানে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
উপাচার্যের বানী: বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষায় নেতৃত্বদানকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম এক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কে পরিচয় করিয়ে দিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।
খুলনা শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে ১০১ একর জমির উপর এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬৭ সালে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এঁর বিশেষ নির্দেশনায় কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ১৯৭৪ সালের ৩ জুন তিনটি প্রকৌশল বিভাগ নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী কোর্সে ১২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে এর সুদীর্ঘ গৌরবময় শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হয়।
পরবর্তীতে জুলাই ১৯৮৬ সালে শিক্ষা, গবেষণা ও জ্ঞানার্জনে উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে কলেজটিকে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলোজি (বিআইটি), খুলনা নামে স্বায়ত্বশাসিত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নতীকরণ করা হয়। পরিশেষে, ০১ সেপ্টেম্বর ২০০৩ সালে ইন্সটিটিউটটিকে উন্নীত ও রূপান্তরক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এতে প্রকৌশল এবং মৌলিক বিজ্ঞানের মোট ১৮ টি বিভাগে ২০১৬-২০১৭ সেশন থেকে প্রতিবছর স্নাতক পর্যায়ে ১০০৫ জন এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি (আইআইসিটি) ২০১০ সালে, ইন্সটিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (আইডিএম) ২০১৩ সালে এবং ইন্সটিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট এন্ড পাওয়ার টেকনোলজি (আইইপিটি) ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম শুরু করে।
ইতোমধ্যে ২০১৬ সালে ‘ইনোভেশন ও ইনোভেটর সেল (আইআইসি)’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের অংশীদারিত্বে উন্নয়ন ও পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ‘আইটি ইনকিউবেশন ও ট্রেনিং সেন্টার’ নির্মাণ কাজ আগামী জুন ২০১৯ সালে সম্পন্ন হবে।
কুয়েটের আয়তন আরও ১৬.৩০ একর বৃদ্ধি, আধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, আধুনিক অবকাঠামো তৈরী এবং আরও চারটি নতুন বিভাগ আগামী চার বছরের মধ্যে খোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা এবং গবেষণাকে শক্তিশালী করে দেশের প্রযুক্তিগত ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে নেতৃত্ব গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়টি অঙ্গীকারবদ্ধ। কয়েক দশক ধরে শিক্ষা, গবেষণা এবং জাতি গঠনে এই দেশের সেরা স্নাতকদের তৈরি করার ক্ষেত্রে কুয়েট অগ্রদূত হয়ে উঠেছে। গবেষণা এবং প্রতিষ্ঠানিক কার্যক্রমকে আর এগিয়ে নিতে এশীয়, ইউরোপীয়, আমেরিকান এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংগতিপূর্ণ সহযোগিতার কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
কুয়েট বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রণী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হিসেবে মর্যাদা লাভ করায় এর উপাচার্য হিসেবে আমি সম্মানিত এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসের মানসম্মত শিক্ষা, গবেষণা এবং সামগ্রিক উন্নয়ন এবং জ্ঞানার্জনের পরিবেশের অগ্রগতি ও প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নিতে আশাবাদী।অনন্য এক শিক্ষা, গবেষণা ও আন্তরিক পরিবেশের অভিজ্ঞতা লাভের জন্য আমি সকলকে কুয়েটে স্বাগত জানাই।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.