১৫ দফা দাবি আদায়ে খুলনায় ট্যাংকলরী ধর্মঘট, উত্তোলন ও বিপনন বন্ধ  

খুলনা ব্যুরো: ১৫ দফার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আজ রোববার (১ ডিসেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করেন ট্যাংকলরী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, জ্বালানী তেল পরিবেশক সমিতি, পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতিসহ জ্বালানী ব্যবসায়ীরা। বন্ধ রয়েছে  পদ্মা,মেঘনা ও যমুনা তিনটি তেল ডিপোর তেল উত্তোলন ও বিপনন। ফলে খুলনা সহ ১৫ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
ধর্মঘটের ফলে অতিরিক্ত ট্রাক-লরীর চাপে ফিলিং স্টেশন, ট্রাক-লরী স্ট্যান্ডে জায়গা না হওয়ায় ট্রাক-লরীগুলোকে সড়ক-মহাসড়কের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা বিটিসি নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানী ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক অমীমাংসিত দাবি সমূহ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা তালবাহানা করছে। বার-বার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। ফিলিং স্টেশন তথা জ্বালানী ব্যবসায়ীদের উপর অযথা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন দপ্তর থেকে বিভিন্ন ধরনের বিধান। যা মেনে নিয়ে জ্বালানী ব্যবসা করা আদৌ সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে জ্বালানী ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে।
১৫ দফা দাবীর মধ্যে রয়েছে জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে সাত শতাংশ প্রদান, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি সুনির্দিষ্টকরণ, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরী শ্রমিকদের ৫ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বীমা প্রথা প্রণয়ন, ট্যাংকলরীর ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্ট্রোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশদ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরী চলাচলে পুলিশি হয়রানী বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ব্যতিত সরকারি অন্যান্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিলার বা এজেন্টদেরকে অযথা হয়রানী বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরী থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।
তেল পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, কর্মবিরতি চলাকালে খুলনার পদ্মা, মেঘনা, যমুনা তেল ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও বিপনন বন্ধ রয়েছে। খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ  বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলায় চলছে না ট্যাংকলরী। একই সাথে পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির আয়োজনে বগুড়া প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ১ ডিসেম্বর থেকে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
এদিকে গতকাল শনিবার (৩০ নভেম্বর) খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরী ওনার্স এসোসিয়েশন ভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর খুলনা ব্যুরো প্রধান এইচ এম আলাউদ্দিন এবং মাশরুর মুর্শেদ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.