’১মে’ বরেণ্য কথা সাহিত্যিক শফীউদ্দীন সরদারের ৮৪ তম জন্মদিন

নাটোর প্রতিনিধি : ১ মে বরেণ্য কথা সাহিত্যিক শফীউদ্দীন সরদারের ৮৪ তম জন্মদিন। ১৯৩৫ সালের এই দিনে তিনি নাটোর সদর উপজেলার হাটবিলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫০ সালে মেট্রিকুলেশন পাশ করার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে আইএ, বিএ অনার্স এবং এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। পরে তিনি লন্ডন থেকে ডিপ্লোমা-ইন-এডুকেশন ডিগ্রী লাভ করেন।

নিজ গ্রামের স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে তিনি একে একে রাজশাহী সরকারী কলেজ ও সারদা ক্যাডেট কলেজে অধ্যাপনা এবং বানেশ্বর কলেজ ও বর্তমান নাটোর রাণী ভবাণী সরকারী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন সফলতার সাথে । তাঁর রচিত প্রথম সামাজিক উপন্যাস চলন বিলের পদাবলি দেশের কোন প্রকাশনা সংস্থা প্রকাশ না করায় তিনি আজীবন ঐতিহাসিক ও সামাজিক উপন্যাস রচনার সিন্ধান্ত গস্খহণ করেন।

সেই থেকে তিনি একে একে রচনা করেন রূপনগরের বন্দী, বখতিয়ারের তালোয়ার, গৌড় থেকে সোনারগাঁ, যায় বেলা অবেলায়, বিদ্রোহী জাতক, বারো পাইকার দূর্গ, রাজ বিহঙ্গ, শেষ প্রহরী, বারো ভূঁইয়া উপাখ্যান, প্রেম ও পূর্ণিমা, বিপন্ন প্রহর, সূর্যাস্ত, পথহারা পাখি, বৈরী বসতী, অন্তরে প্রান্তরে, দাবানল, ঠিকানা, ঝড়মুখো ঘর, অবৈধ অরণ্য, দখল, রোহিণী নদীর তীরে ও ঈমানদার এর মতো জনপ্রিয় ঐতিহাসিক উপন্যাস।

এ ছাড়াও অপূর্ব অপেরা, শীত বসন্তের গীত, পাষাণী, দুপুড়ের পর, রাজ্য ও রাজকন্যারা, থার্ড পন্ডিত, মুসাফির ও গুনাহগার নামে বেশ কয়েকটি সামাজিক উপন্যাস খুবই উপভোগ্য। তাঁর রচিত ভ্রমণ কাহিনীর মধ্যে ‘সুদূর মক্কা মদীনার পথে’ উল্লেখযোগ্য। কল্পকাহিনী সুলতানার দেহরক্ষী, রম্য রচনা রাম ছাগলের আব্বাজান, চার চাঁন্দের কেচ্ছা ও অমরত্বের সন্ধানে উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া শিশু সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে ভূতের মেয়ে লীলাবতী, পরীরাজ্যের রাজকন্যা ও রাজার মেয়ে কবিরাজ। এ ছাড়াও সাম্প্রতিককালে লিখিত বখতিয়ারের তিন ইয়ার, রাজ নন্দিনী, লা-ওয়ারিশ, রূপনগরের বন্দী ও দ্বিপান্তরের বৃত্তান্ত সহ তার মোট লেখা বইয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২টিতে। আর কিছুদিন বেঁচে থেকে তিনি আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা লেখে যেতে চান। শফীউদ্দীন সরদার নিজে তার জন্মদিন পালন করতেই চান না তবে তাঁর ভক্তরা ফুলের শুভেচ্ছা জানাতে বাড়িতে গেলে তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে যান।

কবি আল্ মাহ্মুদের ভাষায় ‘শফীউদ্দীন সরদার বাংলাদেশের সমকালীন সাহিত্যে এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। যিনি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী মুসলিম বীরত্বগাঁথার মহান উপস্থাপক। তিনি আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কথা শিল্পী। আমি উপন্যাসিক শিল্পীর একজন ভক্ত’। কবি আল্ মাহ্মুদের পছন্দের কথাশিল্পী আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁর কর্মের কোন স্বীকৃতি পাননি। এ বিষয়ে তাঁর ভক্ত পাঠকরা সংশ্লিষ্ট সর্বোচ্চ মহলের সুদৃিষ্ট কামনা করেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.